গল্প

অকারণ দীর্ঘশ্বাস

-তাহমিনা শিল্পী

বিকেলের আলো যতটা ম্লান, সন্ধ্যে ততটা উজ্জ্বল! মন্দিরের ঘন্টা জানিয়ে দিল দিন-রাতের সন্ধিক্ষণ। জোরসে পা চালালাম। অন্ধকার নামার আগেই পৌঁছাতে হবে। বাতাসে ভাসছে মৃদুমধুর সুবাস। কাছেই কোথাও ফুটেছে দোলনচাঁপা। হাঁটছিলাম জল টলটলে পুকুরপাড় ধরে। তিনদিকে ঘন দেবদারুর দেয়াল। একধারে চ্যাটার্জীদের পুরনো দালান বাড়ি। দীপেন্দ্র জেঠ্যুর ছোটমেয়ে অরূপা পিছন থেকে ডেকে বলল, ও রেহান’দা কটা ফুল তুলে দিয়ে যাও না গো, সন্ধ্যাদেবের পুজো দিবো। আমি বললাম, কি হবে রোজ রোজ সন্ধ্যাদেবের পুজো করে। তারচেয়ে আকাশে তাকিয়ে দেখ ওই যে সোনারকাঠি, রূপোরকাঠি হাতে ময়ূরপঙ্খি ঘোড়ায় চড়ে তোর জন্য রাজপুত্তর আসছে। অরূপা রেগে বলল, ধ্যাৎ কি যে সব বলো না। ওসব তো মেঘ থোঁকাথোঁকা। আর তুমি থাকতে অমন রাজপুত্তর আমার চাই না। পরিত্যক্ত চ্যাটার্জী বাড়ির দিতে থমকে দাঁড়ালাম। আকাশের দিকে মুখ তুলে চাইলাম। ছায়া-ছায়া রঙের মেলা।
সোনালি-বেগুনীর মিশেলে অবাক মুগ্ধতা। আকাশে আজও আছে পরী, রাজপুত্তর এবং ঘোড়া। পরীর মুখটা যেন অবিকল অরূপা। বড় করে শ্বাস নিলাম……. এক জীবনে অন্তত একটি অকারণ দীর্ঘশ্বাসের ভীষণই প্রয়োজন!

Add Comment

Click here to post a comment

আর্কাইভ

ক্যালেন্ডার

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930