আজকের দেশ

অমানবিকতায় পরিত্যাক্ত শহীদ স্তম্ভগুলো

সি. কে অর্পন, সিলেট

প্রতি বছরের ন্যায় আমরা ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উদযাপিত করে থাকি। বাংলার বীর সন্তানরা ১৯৭১ সালের এই দিনে শকুনমুক্ত করেছিল আমাদের প্রাণপ্রিয় জন্মভূমিকে। লাল সবুজের দেশ। যার নাম বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের জন্ম ও ইতিহাস সম্পর্কে আমরা সবাই কম বেশ জানি। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর অমর ভাষণে জাতিকে নির্দেশনা দিয়ে স্বাধীনতার পথকে সুগম করেছিলেন। তাই তখন থেকে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার যুদ্ধ। লাখো শহীদের প্রাণের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণের মাধ্যমে আমরা আমাদের বিজয় পতাকা ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হই। সব হারিয়ে বাঙালি হাসি মুখে বুকে ধারণ করেছিল লাল সবুজের পতাকা।

কিন্তু আজ আমরা ভুলে গেছি সেই বীর সন্তানদের। ভুলে গেছি তাদের আত্মত্যাগ। আমরা পারিনি আমাদের বীর সন্তানদের প্রাপ্য সম্মানটুকু দিতে। যদি সত্যিই দিতে পারতাম তাহলে আমাদের শহীদ স্তম্ভগুলোর এমন বেহাল দশা হতো না। চোখে পরার মতো নেই কোনো তদারকি এমনকি ন্যূনতম সম্মান করার প্রয়োজন বোধ করি না। বাংলার বীর সন্তানরা যে স্বপ্ন নিয়ে যুদ্ধে গিয়েছিল। তাদের সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা না করে শুধু ফুল দিয়ে স্মরণ করলেই আমাদের দায়িত্ব শেষ হয় না।
দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, আজকের তরুণ প্রজন্ম ও যুব সমাজের মাঝে নেই সেই বীর শহীদদের প্রতি নূন্যতম সম্মান। সাম্প্রতিক আমরা জাতীয় স্মৃতিসৌধ সাভারে বিজয় দিবস পালন করেছি কিন্তু সেখানে প্রতিয়মান অজ্ঞাতনামা বীর শহীদদের কবরে উঠে দেখা যায় তাদের অসভ্য আচরণ। কাউকে দেখা যায় জুতা পায় নিয়ে চলাফেরা করতে আবার কাউকে দেখা যায় সেল্ফিবাজি করতে। অনেক কপোত কপোতীরা পার্কের ন্যায় বীর শহীদদের কবরস্থানে হাঁটাহাঁটি করছে। এসব দৃশ্য দেখে মনে হয় এই জাতি এখনো বিবেকসীমার বাইরে বসবাস করছে।

সকল শহীদদের প্রাণের ত্যাগে অর্জিত সোনার বাংলাদেশের সকল নাগরিক মনে প্রাণে তাঁদের সম্মান করে যায় এই কামনা করি। পরিশেষে বলে যাই, প্রতিদিন হয়ে উঠুক এক একটি বিজয় দিবস। আজকের তরুণরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাই বাঙালির বীরগাথা আর বিজয়ের চেতনা বুকে ধারণ করে, আজকের তরুণরাই গড়ে তুলবে স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ- এমনটাই আশা আমাদের।

আর্কাইভ

ক্যালেন্ডার

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930