মেঘ-বালিকারা আকাশে উড়াল দিলে
বৃষ্টি হয়ে ঝরে যেতো কবিতার পঙক্তি
আষাঢ়-শ্রাবণে কবিতাজলে প্লাবনে পলি হতো
শিশিরের সাথী হয়ে আশ্বিনে ডাবফুল পড়তো ঝরে
রাত্রিতে টিনের চালে বরইয়ের ফুল হতো কবিতার বাণী
পূর্ণিমায় চাকে মধুসমাবেশ হলে ঋতুবতী হয় যেনো মক্ষীরাণি;
ফাল্গুনে ঝরাপাতার মর্মর পল্লবহীন বৃক্ষরাজি
নৈঃশব্দ্যের উচ্চারণে কবিতা শোনাতো
নির্ঘুম রাতের একাকীত্ব সরল কবিতা হতো
পৃথিবীতে প্রবল বৃষ্টিতে এসে যেতো কবিতা মৌসুম;
তখনো পুষ্পের পাপড়িতে ভ্রমরের ভীড় এসে
সযতনে রেখে যেতো ক্লান্তিতে স্বপ্নের ঘুম।
তখন কি কালিদাস মেঘের সদয় ডাকে পত্র দিতেন প্রিয়াকে?
বাল্মিকী তখন কি রচনা করেছেন মহাকাব্য রামায়ন?
মাইকেল মধুসূদন আবিষ্কার করেছেন তখন কি নায়ক রাবণ
কোথায় হারালো আজ স্বতঃস্ফূর্ত কবিতার কাল
কবিতার ভীড় শিল্পবিভা কারা করেছে আড়াল?
মুখগ্রন্থ সয়লাব কবিতা দিয়ে মুঠোফোন ভরা কবিতায়
যার যা-খুশি তা লিখে কবিতার নামে বগল বাজায়;
আমাদের পৃথিবীতে আজ কবিতার প্রবল বর্ষণ
আমলা-কামলা-ভূমিদস্যু-রূপসীরা করে কবিতার শোণিত শোষণ
কূট-ধান্ধাবাজ-স্বার্থান্ধ রাজনীতিক তোলে ব্যারিকেড
সে-ও ভাবে লুঙ্গিতে থাকুক তার কবিতার বাড়তি পকেট;
বাতাসে ঝড়ের বার্তা কবিতায় নেই মৃদু সমীরণ
কাব্যাকাশে শুদ্ধতার অনাবৃষ্টি-খরা অকারণ;
সেই বেদনায় প্রকৃত কবিরা কি কোণঠাসা হয়ে
আজ নেবে নির্বাসন?
-ফরিদ আহমদ দুলাল
কবি, প্রাবন্ধিক, সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব
Add Comment