সাময়িকী : শুক্র ও শনিবার
০৮ জানুয়ারি ২০২২
স্বপ্নে একবার পোলাউ কোরমা রান্না করেছিলাম। এতো বেশি ঘি দিয়েছিলাম, যা খেয়ে সবার গায়ের লোম ঝরে গিয়েছিলো। স্বপ্ন বলে কথা! ঘি কম দেবো কেনো!
আজ বিশ্ব ভালবাসা দিবস উপলক্ষে আমার কাছে তুমি যা চাও তাই দেবো। গার্লফ্রেন্ডের এমন অফার পেয়েও আমার বন্ধু বলেছিলো “আমি তোমার হাতটা ছুঁয়ে দেখতে চাই”। শালা বোকা,,,,,দা।
চেহারা খারাপ, গার্লফ্রেন্ড নেই। না হয় এমন সুযোগ আমার আসলে আমি বলতাম-“তোমার কাছে আমি স্বর্গীয় অনুভূতি চাই”। হয়তো পেতাম, হয়তো না। তবুও চাইতে কৃপনতা করতাম কেনো?
এডলফ হিটলারের কাছে তার রক্ষী বাহিনী আরজি করেছিলো, তাদের জন্য যেনো একটা করে নারী আর শক্তিধর কিছু ঔষধের ব্যবস্থা করা হয়। উত্তরে হিটলার বল্ল-একটা করে কেনো, তোমরা চাইলে জার্মানীর সকল নারীকেই তোমাদের জন্য উৎস্বর্গ করবো। তোমাদের চাওয়ার পরিধি বড় করো।
আমার চার বছরের ছেলেটাকেও দোকানে নিয়ে গেলে এমন সব আবদার করে বসে, যা দিতে আমার হিমশিম খেতে হয়। তবুও না দিয়ে কি পারি? আর মেয়েটার চাহিদা থাকে ১ টাকার দুইটা চকোলেট। মেয়ের আবদার দেখে ছেলেটা হেঁসে হেঁসে বলে-সিদা কোথাকার!
বিয়ের কিছুদিন পরে বউ রিকুয়েষ্ট করেছিলো তার সাথে এক গেইম লুডু খেলতে। বলেছি কাল খেলবো। প্রতিদিনের লম্বা ডিউটি শেষ করে বাসায় ফিরি ঠিকই। কিন্তু সেই কালকের দিনটা আর আসেনা। লুডুর কোর্টটা পুরোনো হয়ে ছিড়ে গেছে, গুটিগুলোও হারিয়ে গেছে। তবুও ডিউটির চাপে সেই গেইমটা আজো খেলা হয়নি।
একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী যখন বলেন, তেমাদের দাবি দাওয়া কি? ঠিক তার প্রতি উত্তরেই আমাদের এক পুলিশ সদস্যের আবেদন একটা ক্রিড়া কমপ্লেক্স তৈরী করার। সাথে সাথেই মঞ্জুর। দীঘির জলে শৈবালের শিশির প্রত্যাশা করলে বৃষ্টি আসবে কি?
স্বপ্ন দিয়ে শুরু করেছি, স্বপ্ন দিয়েই পোষ্টের সমাপ্তি টানবো।
গতকাল নাইট ডিউটিতে ঝিমিয়ে পড়েছিলাম কখন, টের পাইনি। হঠাৎ দেখলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলছেন-পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে তোমাদের দাবি কি? আমি স্যালুট মেরে বল্লাম-বেয়াদবি মাফ করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আমি কম চাইতে লজ্জা পাই। আমাদের ১০০% ঝুঁকি ভাতা, ২০০% পুলিশ ভাতা, ৩০০% জনবল, ৪০০% ছুটি, আর ৮ ঘন্টা ডিউটি চাই।
জননেত্রী হেঁসে দিয়ে বল্লেন- অচিরেই সব বাস্তবায়ন হবে। হঠাৎ খুশির ঠেলায় ঝিমানি কেটে গেলো আমার। জেগে দেখি ১৪ ঘন্টা ডিউটির মধ্যে তখনো আরো ৭ ঘন্টা বাকি।
লেখক, অপূর্ব কান্তি মন্ডল
সাব-ইন্সপেক্টর
স্পেশাল ব্রাঞ্চ, ঢাকা
Add Comment