হ্যালোডেস্ক
ব্যাংক নোট বা টাকায় নানা ধরণের জীবাণুর উপস্থিতি শনাক্ত হওয়া নতুন নয়। বিভিন্ন সময় বিশেষজ্ঞরা টাকার মাধ্যমে সংক্রামক রোগ ছড়ানোর ঝুঁকির কথা বলেছেন।
বিভিন্ন দেশে এই নিয়ে গবেষণাও হয়েছে। ২০১৫ সালে দিল্লির ইন্সটিটিউট অব জিনোমিকস অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ বায়োলজির বিজ্ঞানীরা তাদের এক গবেষণা থেকে জানিয়েছেন, ভারতের বাজারে চালু নোটগুলোর ডিএনএ পরীক্ষা করে তাতে অন্তত ৭৮ রকম বিপজ্জনক মাইক্রোবের অস্তিত্বের প্রমাণ পেয়েছেন – যা থেকে মারাত্মক সব রোগ ছড়াতে পারে।
এদিকে বাংলাদেশের একদল গবেষকও গত বছরের এক গবেষণা থেকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশি কাগুজে নোট ও ধাতব মুদ্রায় এমন সব ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি দেখা গেছে যা সাধারণত মলমূত্রের মধ্যে থাকে।
এ কারণে টাকার মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা একবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা জানান, ভাইরাস বাহকের শরীরে সক্রিয় হয়, অন্যত্র নিষ্ক্রিয় থাকে। টাকায় থাকলে এটি হয়তো নিষ্ক্রিয় থাকে, কিন্তু মানুষের সংস্পর্শে এলে সেটি করোনা ভাইরাসের উপসর্গ বা রোগের সৃষ্টি করতে পারে।
বিশ্বজুড়ে এমন আশঙ্কার পর বিশেষজ্ঞরা, ব্যাংক নোট এড়িয়ে স্পর্শবিহীন মাধ্যম বা প্রযুক্তি ব্যবহার করে কেনাকাটা বা লেনদেন করার পরামর্শ দিয়েছেন।
স্পর্শবিহীন লেনদেন বা প্রযুক্তি বলতে, ব্যাংক নোট ছাড়া অন্য মাধ্যম যেমন কার্ড, বিভিন্ন ধরণের অ্যাপ যেমন বিকাশ বা নগদ অথবা অন্য কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করে লেনদেনের কথা বোঝানো হয়েছে।
কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এ ধরণের পরামর্শ মেনে চলা কঠিন। কারণ এখানে শতভাগ লেনদেন হয় ব্যাংক নোটের মাধ্যমে। এ কারণে বিশেষজ্ঞরা ব্যাংক নোট ব্যবহারের বিষয়ে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। যেমন-
১. টাকা গোনার সময় অবশ্যই হাত দিয়ে মুখের লালা নেবেন না।
২. ব্যাংক নোট বা টাকা নাড়াচাড়ার পরপর অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। না পারলে স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে।
৩. অত্যধিক মুদ্রা নাড়াচাড়া করেন, যেমন ব্যাংক কর্মী বা মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীরা, তাদেরকে অবশ্যই অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে। তারা গ্লাভস পরে নিতে পারেন। সতর্কতা হিসেবে হ্যান্ড স্যানিটাইজারও ব্যবহার করতে পারেন।
৪. টাকা ধরা বা ব্যবহারের পর পরই চোখ, নাক বা মুখে হাত দেয়া যাবে না।
৫. এটিএম বুথের বাটন বা টাকা থেকেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে। এ কারণে টাকা তোলার পর সতর্কতা হিসেবে হাতে স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
সূত্র: বিবিসি
Add Comment