সাময়িকী : শুক্র ও শনিবার
-ইসরাত জাহান
চৌকাঠে পা যেই পেরলো
নাম পদবী বদলে গেলো।
কত মানুষ, সন্ধানী চোখ
সব অচেনা, সখ্যতা হোক।
উৎসুক মুখ হিসেব নিলো
ঠিক ক’ভরি গয়না এলো।
লাল শাড়িতে আমিও ছিলাম
ধুকধুক বুক, ঘাবড়ে গেলাম।
বছর পঁচিশ বাবার স্নেহে
মায়ের হাতে তৈরী আমি।
গ্রন্থিবদল, বাপের বাড়ি
খুচরো স্মৃতির পাতা ভারি।
ঘন্টা দুয়েকে সড়ক পথে
বরের কাঁধে প্রথম মাথা।
বাড়ি বদল হওয়ার মাঝে
আমার জীবনে নতুন পাতা।
বাড়ির উঠোনে পাতাবাহার
খুব ন্যাওটা কুকুর ছানা।
ওদের এখন সামলাবে কে?
প্রশ্নগুলো খুব অজানা।
দুপুরবেলা খাবার পাতে
ভীষণ ঝালে বিষম খেলাম
খেয়ালতো নেই কারও অত
মা হলে পিঠ চাপড়ে যেত।
শোয়ার আগে ঘরে গেলাম
ঘুম পাড়াত সুরের ছলে।
আজকে রাতে ঘুম আসবে?
এ বাড়িতে ওসব মেলে?
যে হাত ধরে এঘর চেনা
সেও ব্যস্ত নানান কাজে।
অসুবিধা জানাই কাকে?
সদ্যচেনা মুখের মাঝে।
নতুন ঘরের দক্ষিণেতে
জানলা বন্ধ সকাল থেকে।
ভ্রুক্ষেপ নেই কারও অত
গুমটে ঘরে কি মন টেকে?
সাহস করে খুলেই দিলাম
ঘর ভর্তি দমকা হাওয়া।
জানালা গুলো পড়শি এখন
ওদের চোখেই নতুন পাওয়া।
বাপের বাড়ির দেরাজ জুড়ে
থরে থরে বইএর সারি।
ওদের কবে সঙ্গে পাব?
ভাব জমাব, ঘুচিয়ে আড়ি।
এদিক ওদিক সব অচেনা
নতুন মানুষ, নতুন জগৎ।
হঠাৎ দেখি বসার ঘরে
তাকাচ্ছে কে বৃদ্ধমত।
সৌম্যবেশে আপন মানুষ
শান্ত চাওয়ায় দৃষ্টিরত।
দেওয়াল জোড়া রবীন্দ্রনাথ।
আগলে রাখছে আগের মত।
Add Comment