সাময়িকী: শুক্র ও শনিবার
-নূর এ আলম
‘কবিতা’ একটি অবহেলিত মেয়ের নাম
ভাটির দেশে তার বাড়ি;
নদী পারে ছোট্ট একটি গ্রাম
চলত একেলা ছিল না কোনো অভিমান।
যদি আকাশ কালো মেঘ জমে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেত
তব ছিল না তার কোনো প্রতিক্রিয়া
সুধু আকাশ পানে থাকিত চাহিয়া;
বোকা মেয়েটি ছিল রূপে বাহার
মাথা ভরা কেশ, কপাল জুড়ে ভ্রু
আরো ছিল বুক ভরা ভালোবাসা।
সকলে তাকে নির্বোধ মনে করিয়া তিরষ্কার করিত সদা
পারার খেলার সাথী দুষ্ট মেয়েরা পাত্তা দিত না কভু
বরং ডাকিত তাকে বলধ বলিয়া;
কিন্তু কাজে পাকা মেয়েটি পড়াশোনায়ও ছিল ভালো
এমনকি! খেলাধূলার প্রতিযোগিতায়ও পুরস্কার এনেছিল
ললিত কন্ঠস্বর, গল্প, ছন্দ-কবিতা ছিল তার প্রিয়
মাঝে মাঝে মনের আনন্দে একা একা ঘরের কোণে গাহিত গান
আর সাজসজ্জা করিত চুপিসারে।
আমি বলবঃ মেয়েটির ভিশন অনুভূতি ছিল, ছিল সরলতা
কারণ, মেয়েটি এতগুলো গুনের অধিকারী;
কিন্তু গরীব পরিবার, এভাবে চলতে চলতে.. হঠাৎ!
একদিন পড়াশোনা থেমে যায়
পাশের বান্ধবীদের অনেকেরই বিবাহ হয়ে গেছে।
জন্মের পর থেকে তখন ১৩টি বছর পার হয়ে গেলো
পরিবার তাকে বিবাহ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে
অপরদিকে কিছু বুঝে ওঠার আগেই অসময়ে
বিবাহ করার ঘন্টা বেজেছে;
যেনো মহা-শুন্যে নীল আকাশ মাথার উপর ভেঙ্গে পরলো
ছন্নছাড়া মনটা কেমন উদাসীন, লাগেনা কিছু্ই ভালো।
এরপর থেকে একেরপর এক নিত্যদিন
দূরদূরান্ত থেকে কত-না অপরিচিত মুখ দেখে যায় তাকে
মনে হয় যেনো টিনের ছাউনি ছোট্ট ঘরটিতে বাজার বসেছে।
এমতাবস্থায়, আরো দুটি বছর চলে গেলো
অতঃপর, পরপর দুটি জায়গায় বিবাহ হয়ে গেলো
এরই মধ্যে আরো দশটি বছর বয়ে গেলো
অথচ! কভু স্বপ্ন মেলেনি ললাটে, আশা পূর্ণ হয়নি তার জীবনে
বরং বারেবারে কষ্ট সয়ে বঞ্চিত হৃদয়ে ফিরে যেতে হয়েছে পূর্বে।
মনকে সুধায় কেমনে!
এই জগতে ভালোবাসা নাই রে আছে সুধু লোভ আর যন্ত্রণা
মনের রঙে রঙিন যে জন মূল্য পায় না রে সেই জন
পায় সুধু বাহ্যিক সৌন্দর্যৈ আছে যে জন;
আজও শত বঞ্চনা নিয়ে ফেলে-আসা দিনের মতন চলে একেলা
তব নাই কোনো অভিমান
যদি ফুল ফুটে কখনো সেই আশায়
খোলা আকাশে বহিবে সেদিন শান্তির বাতাস।
Add Comment