-ফারজানা রহমান তাজিন
শীত এলে ঘুরতে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। শীতকালেই ভ্রমণের উপযুক্ত মনে হয়। শীতকালীন ছুটি উপলক্ষে অনেকেই দেশে এবং দেশের বাইরে ভ্রমণে যান। তবে শীতকালে আমাদের দেশে ভ্রমণের অনেক স্থান রয়েছে মনোমুগ্ধকর। অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশে রয়েছে অসংখ্য প্রাচীন নিদর্শন ও বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান। প্রতি বছর প্রচুর পর্যটক দেশ ও দেশের বাইরে থেকে আসেন এগুলো দেখার জন্য। আসুন জেনে নেই কিছু স্থানের নাম:
কক্সবাজার
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে গেলে বৌদ্ধ মন্দির, বার্মিজ মার্কেট, অগ্গমেধা ক্যং, রাডার স্টেশন, হিলটপ সার্কিট হাউস, হিমছড়ি, বৌদ্ধ বিহার, রাবার বাগান, সাফারি পার্ক, মাথিনের কূপ, ছেঁড়াদ্বীপ, আদিনাথ মন্দির ও ক্যাং, সোনাদিয়া দ্বীপ এবং কুতুবদিয়া বাতিঘরও ঘুরে আসতে পারেন।
কুয়াকাটা
শীতে সাগরকন্যা কুয়াকাটা ভ্রমণের জন্য আরামদায়ক। সমুদ্রস্নানের উপযুক্ত সময়। এছাড়া কাঁকড়া দ্বীপ, গঙ্গারচর, রাখাইনপাড়া, বুদ্ধমূর্তি এবং শুটকি পল্লি দেখে আসতে পারেন।
কুমিল্লা
হাজার বছরের পুরাতন এবং ঐতিহাসিক নিদর্শন, স্থাপনা, পুরাকীর্তি কিংবা স্মৃতিচিহ্নের দেখা পেতে হলে যেতে হবে কুমিল্লায়।
সেন্টমার্টিন
টানা কর্মব্যস্ত সময়কে পেছনে ফেলতে ঘুরে আসুন প্রবালদ্বীপ খ্যাত সেন্টমার্টিন থেকে। পরিবার, বন্ধু, সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আয়োজন করতে পারেন বারবিকিউ পার্টি।
নীলগিরি
বান্দরবান শহর থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বান্দরবান-থানছি পথ ধরে যেতে হবে নীলগিরি। মেঘ-পাহাড়ের খেলা দেখার পাশাপাশি পাহাড়ের চূড়ায় মেঘ ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছা পূরণ করতে চাইলে যেতে হবে বান্দরবানের নীলগিরিতে।
জাফলং
ভ্রমণের জন্য এ সময় বেশ উপযুক্ত। কর্মব্যস্ত জীবনে একটু অবসর পেলেই ঘুরে আসতে পারেন আপনার কাঙ্ক্ষিত স্থান। এ ক্ষেত্রে বেছে নিতে পারেন পাথরের স্বর্গ খ্যাত জাফলংকে।
সুন্দরবন
ভ্রমণপিপাসুদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণের জায়গা সুন্দরবন। একইসঙ্গে কচিখালী, কটকা বন্যপ্রাণি অভয়ারণ্য, জামতলা বীচ, হারবারিয়া ও করমজল ভ্রমণ করতে পারেন।
চালন্দা গিরিপথ
প্রকৃতি এখানে উদার ও মায়াময়। বন-পাহাড়ের সেই মায়াবী ডাক কিংবা ঝরনার হাতছানি এড়াতে পারে না কেউ। এরসঙ্গে যুক্ত হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডভেঞ্চার খ্যাত ‘চালন্দা গিরিপথ’।
খাগড়াছড়ি
নৈগর্সিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি খাগড়াছড়ি ভ্রমণ করতে পারেন এই শীতে। সঙ্গে সাজেক ভ্যালি, কংলাকপাড়া, দীঘিনালা বনবিহার, রিছাং ঝরনা, আলুটিলা রহস্যময়গুহা, সাকংসস নগর বৌদ্ধমন্দির, ঝুলন্ত ব্রিজসহ আরো কিছু স্থান ভ্রমণ করতে পারেন।
সিলেট
বন, সমুদ্র বা পাহাড় দেখা হয়ে গেলে আসতে পারেন সবুজ চা-বাগান দেখতে। সিলেট বিভাগজুড়ে রয়েছে অসংখ্য চা-বাগন। তবে সবচেয়ে বড় ও বেশি চা-বাগান রয়েছে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায়। রাতের ট্রেনে বা বাসে রওনা হয়ে সকালে নেমে সারাদিন চা-বাগান দেখে আবার রাতে ফেরা যাবে ঢাকায়। চাইলে শ্রীমঙ্গলে দিনে গিয়েও দেখে আসা যাবে।
হাওর এলাকাসমূহ বাংলাদেশের বৃহৎ হাওরগুলো রয়েছে সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজারসহ সিলেট অঞ্চলজুড়ে। হাকালুকি, টাঙ্গুয়া, পাশুয়া, বাইক্কাসহ বিভিন্ন হাওর দেখতে আসতে পারেন এ অঞ্চলে। শীত মৌসুমে অসংখ্য পারিযায়ীর পাখির কলতানে হাওর হয়ে ওঠে অন্যরকম সৌন্দর্যের ভূমি। বর্ষায় হাওরের আরেক সৌন্দর্য। ঢাকা থেকে রাতে বাসে বা ট্রেনে রওনা হয়ে সারাদিন হাওর ঘুরে আবার রাতের গাড়িতে সকালে ঢাকা ফিরে আসা যাবে। সিলেট অঞ্চল কেবল চা-বাগান আর হাওর নয়, এ অঞ্চলজুড়েও রয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য অরণ্য ও ঝরনা। এর মধ্যে মাধবপুর ঝরনা অন্যতম। আরও আছে গহীন বনের হামহাম ঝরনা। দুটো ঝরনাই মৌলভীবাজের।
Add Comment