―বেনিন স্নিগ্ধা
০৪ নভেম্বর ২০২২
‘অন্তর মম বিকশিত করো অন্তরতর হে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ০৪ নভেম্বর খ্রিষ্টাব্দ, ঢাকা’র সেগুনবাগিচায় অবস্থিত জাতীয় সঙ্গীত, নৃত্যকলা ও আবৃত্তি মিলনায়তনে আবৃত্তিপ্রেমী’র আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো দ্বিতীয় আবৃত্তি উৎসব ও মিলনমেলা ২০২২। এবারের আবৃত্তি উৎসবের শিরোনাম ছিল ‘শতকণ্ঠে শত কবি’র কবিতা আবৃত্তি’।
কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলামসহ বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান সব কবিদের কবিতা আবৃত্তি করার জন্য বেছে নিয়েছেন আবৃত্তি শিল্পীরা। নতুন কবিদের কবিতাও আবৃত্তি করেন আবৃত্তি শিল্পীগণ। এছাড়া চর্যাপদ, কবি আলাওলের পদ্মাবতী, মধ্যযুগের বৈষ্ণব পদাবলি, নদের চাঁদ ও মহুয়ার পালা (মৈমনসিংহ গীতিকা), শ্রুতিনাটক, ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের অন্নদামঙ্গল কাব্যের অংশবিশেষ এর আবৃত্তি ছিল এবারের উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ।
“শতকণ্ঠে শত কবি’র কবিতা আবৃত্তি”র এত বড় উৎসব অতীতে কখনো হয়নি এ দাবি আয়োজকদের। কবিতা ও আবৃত্তি যাদের পছন্দ এরকম ২ লাখ ২৩ হাজার মানুষ যুক্ত আছেন অনলাইন এই আবৃত্তি সংগঠনটিতে।
“আবৃত্তিপ্রেমী” সকলের সহযোগিতায় বহুল পঠিত ও জনপ্রিয় কবিতা আবৃত্তি থেকে সরে এসে শতাধিক কবি’র কবিতাকে আবৃত্তির জন্য নির্বাচন করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় ০৪ নভেম্বর আবৃত্তিশিল্পীরা শতাধিক কবি’র কবিতা কণ্ঠে ধারণ করে কবিদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
আবৃত্তিপ্রেমী গ্রুপটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মোহাম্মদ গাউসুল আজম বলেন, ‘কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অভিসার কবিতাটি আবৃত্তি করে ভিডিও পোস্ট করে আলোচনায় এসেছেন ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে নিভৃতচারী আবৃত্তিশিল্পী গাজী বিলকিস আরা জামান। সেই আবৃত্তিশিল্পীকে আমরা আবৃত্তির জন্য মঞ্চে নিয়ে এসেছি। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ০৪ জন পথশিশুকে আবৃত্তি প্রশিক্ষণ প্রদান করার পর মঞ্চে আবৃত্তি করার জন্য তাঁদেরকে সবার সামনে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি’। আবৃত্তি কুইজ প্রতিযোগিতা ও রচনা প্রতিযোগিতা এবারের উৎসবে নতুন সংযোজন।
সকাল নয়টায় শান্তি ও শুভ্রতার প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত আবৃত্তিশিল্পী আশরাফুল আলম।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কবি ড. মুহাম্মদ সামাদ, সভাপতি জাতীয় কবিতা পরিষদ ও সহ-উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আবৃত্তি উৎসবে উদ্বোধনী পর্বে সম্মিলিতভাবে শতকণ্ঠে আবৃত্তি করান আর্যকণ্ঠ মীর বরকত।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড: নিরঞ্জন অধিকারী। আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও সংশ্লিষ্ট পরিমন্ডলের বিশিষ্ট ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
মঞ্চে ১১২ জন কবির ১১৭ টি কবিতা আবৃত্তি করেন ১২১ জন আবৃত্তিশিল্পী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ‘আবৃত্তি উৎসব ও আবৃত্তিশিল্পী মিলনমেলা ২০২২’ এর আহবায়ক এবং বাংলাদেশ বেতারের সংবাদ ও অনুষ্ঠান উপস্থাপক মোহাম্মদ গাউছুল আজম (গাউস)।
Add Comment