হ্যালোডেস্ক
ভোরের ঘাসের বুকে শিশিরের টলমলে উপস্থিতি, কুয়াশার হালকা চাদর আর রাত নামলেই একটু একটু করে জেঁকে বসা ঠান্ডা- এসবই তো শীতের পূর্বাভাস। এমন সময়ে না ভারি শীতের পোশাক পড়া যায়, না সাধারণ পোশাক। তবে এ হালকা শীতটা কিন্তু ফ্যাশনের জন্য দারুণ। চমৎকার সব স্টাইলিশ পোশাক হতে পারে আপনার এ সময়ের সঙ্গী। শীতের এই সময়টাতে উষ্ণতার পর নিতে ফ্যাশন ও ট্রেন্ড বজায় রেখে চলছে শীতের পোশাক কেনার ধুম। হিম কুয়াশায় আর সন্ধ্যায় ঝিরঝিরে বাতাসটাকে ফাঁকি দিয়ে তরুণ তরুণীরা মেতে উঠছে শীত ফ্যাশনে। প্রতিবারের মতো শীতের ফ্যাশনে এসেছে হুডি। শীতে তরুণ-তরুণীর পোশাক মানেই চোখে ভেসে ওঠে পায়ে কনভার্স, পরনে জিন্স ও ফুল স্লিভ টি-শার্ট, ফুল স্লিভ পোলো শার্ট, জ্যাকেট, কাশ্মিরি শাল, চাদর, মাফলার সঙ্গে যোগ হয় শীত ফ্যাশনের মুডি পোশাক হুডি।
হুডি: হুডি পোশাক পশ্চিমা ফ্যাশনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সংস্করণ। সময় বদলের ফ্যাশনে হুডি টিনএজদের মধ্যে জনপ্রিয় একটি পোশাক ও ফ্যাশন হয়ে উঠেছে। শুধু ছেলেরাই নয়, স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরার জন্য টিনএজ মেয়েরাও বেছে নিচ্ছেন চমৎকার এ শীত পোশাকটি। শীতে হিমেল হাওয়ার হাত থেকে কানকে বাঁচাতে হুডির বিকল্প নেই। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ যে কোনো জায়গায় হুডি পরে সহজেই চলাচল করা যায় এবং অন্যান্য শীত পোশাকের মতো বাড়তি কোনো ঝামেলা নেই। হুডির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো জিন্স, সালোয়ার-কামিজসহ যে কোনো পোশাকের সঙ্গে মানানসই। হালকা শীতের মধ্যে এ পোশাকটির চাহিদা সব থেকে বেশি থাকে। আমাদের দেশে হুডি ফ্যাশনের আগমন ঘটে মূলত পশ্চিমা ফ্যাশনের হাত ধরেই। কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস বইছে। কানের ভেতর দিয়ে পৌঁছে যেন অবশ করে দিচ্ছে মাথা। কানঢাকা টুপি পরা ছাড়া গতি নেই; কিন্তু জিনিসটা তো বড্ড সেকেলে। ফ্যাশনেবল না হলে কী আর তা পরা যায়? এর সমাধান হুডি। জ্যাকেট বা সোয়েটারের শুধু হুডটা টেনে মাথা ঢেকে নেয়া। দেখতেও দারুণ। ব্যাস আর কী চাই। হুড পড়া তরুণ-তরুণীর সংখ্যা তাই বাড়ছেই।
ছেলেদের পোশাক: পুরুষের শীত পোশাকের মধ্যে প্রথমেই ভাবনায় আসে সোয়েটার ও জ্যাকেট। এছাড়া কিছু পোশাকের সঙ্গে শীতের চাদরও বেশ মানিয়ে যায়। তবে ভারি সোয়েটার, জ্যাকেট বা শাল কিছুই পরার সময় এখনো আসেনি। বাজারে ঘুরলেই দেখবেন একদম হালকা জিন্স বা গ্যাবাডিনে তৈরি জ্যাকেট এরই মধ্যে চলে এসেছে। হালকা শীতে এগুলো দেখাবে দারুণ স্টাইলিশ। পাতলা উলের সোয়েটার কিংবা ফুল স্লিভ টি-শার্টও চলে এসেছে বাজারে। এগুলো একইসঙ্গে আপনাকে দেবে উষ্ণতা ও স্টাইল। শীতের সময় জ্যাকেট কিংবা সোয়েটারের সঙ্গে নানা স্টাইলের জিন্সের চলটাই সবচেয়ে বেশি। ভালো লাগবে ফর্মাল প্যান্টের সঙ্গেও। গরম কাপড় মানেই এখন আর মোটা কাপড় বোঝায় না। তাছাড়া তরুণরা চান, শীতের কাপড়ে যেন ফ্যাশনটাও হয় ঠিকঠাক। আর তাই এখন বাজারে হালকা গরম কাপড়ের কাটছাঁটে বৈচিত্র্যের অভাব নেই। মোটা স্যুট-কোট বা হাত থেকে পা অবধি শীত পোশাকের আবরণে নিজেকে মুড়িয়ে রাখা ঠিক পছন্দ নয় অনেকের। কাপড়ের ধরনের সঙ্গে রঙ আর নকশাটাও দেখে নেন ছেলেরা।
একটা সময় ছিল যখন কটি কেবলমাত্র ব্লেজার, স্যুট কিংবা ওভার কটের নিচেই বেশি শোভা পেত। কিন্তু এখনকার সময়ে কটির ফ্যাশনে ঘটেছে বিশাল পরিবর্তন। ফ্যাশনের অন্যতম উপাদান হিসেবে কটি তরুণ-তরুণীদের কাছে ভীষণ জনপ্রিয়। কটিও হতে পারে হালকা শীতে ফ্যাশনের অন্যতম পোশাক। ফরমাল, ক্যাজুয়াল, পাঞ্জাবি, শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, টপস-স্কার্ট, ফ্লোর টাচ লং সিল্ভ অথবা আনারকলি পোশাকের সঙ্গেও ব্যবহৃত হচ্ছে কটি।
ফ্যাশনেবল তরুণীরা বিভিন্ন রঙের শার্ট বা ফতুয়ার সঙ্গে স্কার্ফ ব্যবহার করতে পারে। স্কার্ফ এমন একটা ফ্যাশন অনুষঙ্গ, যা শীত বা গ্রীষ্ম যেকোনো ঋতুতে যেকোনো পোশাককেই দারুণ আকর্ষণীয় করে তোলে। তবে নিজেকে উষ্ণ রাখার অনুষঙ্গ যাই হোক না কেনো, সেটি যেন আপনার সঙ্গে মানানসই হয় সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
মডেল: ফারহানা রহমান তিশা
ছবি: আল মাসুম সবুজ
Add Comment