হ্যালোডেস্ক
২০ মে ২০২২
ভারতীয় প্যাভিলিয়নে তখন সোরগোল। এত মানুষ গিজগিজ করলে যা হয় আর কী! বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক ‘মুজিব: দ্য মেকিং অব অ্যা নেশন’-এর বহুল প্রতীক্ষিত ট্রেলার প্রকাশ হয়েছে। ভিড় হওয়াটাই স্বাভাবিক। ছবিটির প্রধান দুই অভিনয়শিল্পী আরিফিন শুভ ও নুসরাত ইমরোজ তিশাকে ঘিরে ব্যস্ত বাংলাদেশ ও ভারতীয় সংবাদকর্মীরা। হঠাৎ এসে হাজির বলিউড অভিনেতা নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকি। বাংলাদেশের দুই তারকাকে শুভকামনা জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৯ মে) ছিল নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকির জন্মদিন। এ নিয়ে সাতবার কানসৈকতে জন্মদিন কাটলো তার! ভারতীয় প্যাভিলিয়নের মঞ্চে ‘মুজিব: দ্য মেকিং অব অ্যা নেশন’ ছবির ডিজিটাল পোস্টারের সামনে দাঁড়িয়ে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটান নওয়াজুদ্দিন। তাকে দেখেই জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান আরিফিন শুভ ও তিশা। তিনজন মিলে আলোকচিত্রীদের সামনে পোজ দিয়েছেন।
এরপর মঞ্চে আসেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তার পরিচালিত ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’ ছবিতে অভিনয় করেছেন ৪৮ বছর বয়সী এই অভিনেতা। ফলে এক ধরনের পুনর্মিলন হয়ে গেলো তাদের। দেখা হতেই একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করেন তারা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য রাখেন ফ্রান্সে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত জাভেদ আশরাফ। এরপর বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও ভারতের কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর একে অপরকে বন্ধুত্বের স্মারক হিসেবে শাল পরিয়ে দেন।
ভারতের কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর দৃষ্টিতে, ‘বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে তুলে ধরে। প্রতিবেশী দুটি দেশ কীভাবে হাতে হাত রেখে এগিয়ে যেতে পারে বাংলাদেশ ও ভারত তা দেখিয়েছে।’
ট্রেলার প্রকাশের পর পরিচালক শ্যাম বেনেগালের ভিডিও বার্তা দেখানো হয়। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন অসাধারণ একজন ব্যক্তিত্ব। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসে ত্যাগ ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের জাতির পিতা। আমার জন্য এ ছবিটি গুরুত্বপূর্ণ। এতে উপমহাদেশের সেরা কয়েকজন অভিনয়শিল্পীর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। এখন আমি ছবিটির শেষ মুহূর্তের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। তাই কানে আসতে পারিনি।’
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা এবং ভারত সরকারের এনএফডিসির যৌথ প্রযোজনায় বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকে তাঁর চরিত্রে আরিফিন শুভ এবং শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের তরুণী বয়সের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা।
তিশা বলেন, ‘ছবিটি নতুন প্রজন্মের জন্য ইতিহাস হয়ে থাকবে। আমার মেয়ে এই ছবি দেখে বাংলাদেশের ইতিহাস জানতে পারবে। বঙ্গবন্ধু শুধু রাষ্ট্রনায়কই ছিলেন না, তিনি ছিলেন বাংলাদেশের হৃদয়।’
দর্শকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আরিফিন শুভ ছবিটির জন্য নির্বাচিত হওয়া ও দৃশ্যধারণের কিছু স্মৃতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে আমরা জাতির পিতা হিসেবেই জানি। কিন্তু তিনি কতটা পরিবারকেন্দ্রিক ছিলেন তা এই ছবিতে দেখা যাবে। পরিবার, বন্ধু ও সহকর্মীদের সঙ্গে তার নিবিড় সম্পর্কের ধারণা পাবেন দর্শকরা।’
নিজের বক্তব্যের সবশেষে বঙ্গবন্ধুর বিখ্যাত উক্তি বলেছেন শুভ, ‘আমি বাঙালি, আমি মুসলমান, একবার মরে দুইবার মরে না।’
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে সবশেষে বক্তব্য রাখেন ভারতের কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব অপূর্ব চন্দ্র। ট্রেলার প্রকাশনা অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন, ভারতীয় পরিচালক গৌরিন্দর চাধা, বাংলাদেশের নির্মাতা সামিয়া জামান, আবু শাহেদ ইমন, ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজক আহমেদ মুস্তফা জামাল, ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম তালহা প্রমুখ।
Add Comment