সাময়িকী: শুক্র ও শনিবার
-বিলাল হোসেন
সাপটি ফণা তুলে দাঁড়িয়েছিল।
লোকটিকে দেখে সাপটির মায়া-ই হয়। যেন দেখতে পায় , ফণার মাথায় মানিক রেখে সে দুলতে থাকে।
সদাই কিনতে দোকানে এসেছে লোকটি। লুঙ্গি পরা। ঘোরবর্ষাকাল— গাঙ ভেঙে এসেছে। লুঙ্গিটা ভাঁজ করে কোমর পর্যন্ত তোলা। পাদুটি খোলা—কাদামাটি জড়ানো। একেবারেই ফণার সামনে। লোভনীয় ব্যাপার।
সাপটি মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকে। একটু সময় নেয়।
বিষদাঁত টাটাচ্ছে—টাটাক!
দোকানঘরটি নির্জন। লোকটি ছাড়া আর কোন কাস্টমার নেই।
এটাই মোক্ষম সময়!
তবু সাপটি ছোবল দিচ্ছে না। আরেকটু সময় নেয়।
জিব বের করা সাপ বুঝতে পারে লোকজনের শব্দ। দোকানের দিকেই আসছে ওরা।
তবু সাপটি কাটে না লোকটাকে।
অবশেষে লোকটিই কাজটা করে।
লোকটি দেখে— তার পায়ের কাছে একটা সাপ। ফণা তুলে আছে। সে পা দিয়েই ফণাটি মাটির সাথে চেপে ধরে। তারপর পিষতে থাকে। পিষতে পিষতে পিষতে …
দোকানের ভেজা মাটিতে গেঁথে রইল সাত রাজার ধন।
ঢালি পাড়ার মতি শেখের নাতি ফজর কী কারণে কে জানে—বাপের তাড়া খেয়ে গাঙ ভাঙতে ভাঙতে বলে— তুমি হইছ এক ভোদাই। তোমার বাপ আছিল রামভোদাই। নইলে সাত রাজার ধন কেউ পায়ে পিষে!
গল্পটা মেঘ থেকে পাওয়া। মেঘটা আবার গ্রামের পুবে যে বন আছে—তার সাথে ঘনিষ্ঠ। লেনদেনের সম্পর্ক। বন দেয় হাওয়া। মেঘ দেয় বৃষ্টি। কিন্তু এর সাথে সাপের কি যোগ সেটি আজও অমীমাংসিত।
তবু গল্পটা নিয়ে পাতা কুড়ানি বাতাস এগাঁও ওগাঁও করে।
সাপেদের মধ্যে অবশ্য মৃত সাপটি নিয়ে কোন বিতর্ক নেই। তারা আফসোস করে বরং।
মানুষ এত বোকা হয়!
বোকামির গল্প বলতে বলতে তারা একে অপরের ওপর ঢলে পড়ে। কী যে হাসাহাসি !
Add Comment