হাসিব মিয়া প্রতিদিনই সাভার থেকে ৭০ কেজি দুধ এনে ধানমন্ডির বাসায় বাসায় দিয়ে যায়।
সে ৪০ টাকা করে দুধ কিনলেও ঢাকায় এনে ৮০ টাকায় বিক্রি করে!
দিনে ৩’শত টাকা খরচ বাদ দিলেও তার মাসে ৭৫ হাজার টাকার মত থাকে..
ক্যান ইউ ইম্যাজিন যে, একজন অশিক্ষিত লোক মাসে ৭৫ হাজার টাকা ইনকাম করছে??
তারেক সাহেব ১.৫ লক্ষ টাকা এ্যাডভান্স দিয়ে নিউ মার্কেটের দোতলায় একটি দোকানের সামনে বসার অনুমতি নিয়েছিলেন প্রায় ২১ বছর আগে|
মাসে ভাড়া দিতে হয় ১০ হাজার টাকা। তিনি সেখানে বসে প্যান্ট শার্ট ছোট করা সহ টুকটাক সেলাইয়ের কাজ করেন..|
এই ২১ বছর দর্জির কাজ করে সায়েদাবাদে একটি ৫ তলা বাড়ি, রায়েরবাগে ৩ তলা বাড়ি, মালিবাগ হোসাফ টাওয়ারে দুইটা দোকান কিনেছেন।
বাড়ি ভাড়া ও দোকান ভাড়া থেকে উনার মাসিক আয় ২.৫ লক্ষ টাকা!
যখন জিজ্ঞেস করলাম, “দর্জির কাজ করে কত পান?”
উনি হেসে বললেন, “কখনো ৭০, কখনো ৮০, কখনো ৬০-ও হয়, তবে ৬০ হাজার খুব কমই হয়”
তিনি একজন দর্জি।
কিংবা মল চত্বরের ইগলুর আইসক্রিম বিক্রেতার কথাই ধরিনা কেনো….
আইসক্রিম খেতে গিয়ে জানলাম তার বাড়িও আমার জেলায়, আইসক্রিম বিক্রি করেই তিনি মোহাম্মদপুরে ছয় তলা বাড়ি করেছেন, মাসে লাখ দেড়েক টাকা ভাড়াও আসে।
এসব মানুষ তারা যাদেরকে উঠতে বসতে আমরা ঘৃণার চোখে দেখি, নিয়মিত ধমকও দেই।
কিন্তু, ২৫ বছর পড়াশুনা করেও তাদের সমান বেতনের চাকরি ম্যানেজ করতে পারিনা।
এসব লোক যেখানে পড়াশুনা না করেই উদ্যোক্তা হয়ে গেছে আমরা সেখানে পড়াশুনা করে অন্যের গোলামী করার সুযোগও পাইনা।
ট্রাডিশনাল বিজনেসকে ঘৃণা করে ইনোভেটিব কিছু করতে চেয়ে আমাদের অবস্থা এমন হয়েছে যে, আমরা কোন স্টার্টআপই দাঁড় করাতেই পারিনা।দিনশেষে আমাদের চাকরি খুঁজতে হয় আকিজ সাহেব কিংবা কাউছ মিয়ার জর্দার ফার্মে।
আমরা জর্দার ম্যানেজার হয়েই প্রাউড ফিল করি। অথচ এই স্টার্ট আপ গুলো যদি তরুণ শিক্ষিতরা শুরু করতো, তাহলে ??
হাসিব মিয়ার ক্ষমতা নাই ৭০ কেজির উপরে বিক্রি করার।কিন্তু আমরা পারতাম এমন একশ হাসিব দিয়ে বিজনেসটা বড় করতে।কিংবা একশত তারিককে ম্যানেজ করতে পারতাম, কারন আমাদের ম্যানেজারিয়াল অ্যাবিলিটি তাদের চেয়ে বেশি।
আমরা সেটা না করে মাল্টিন্যাশনালে জব করে গাধার মত খেটে হাজার পঞ্চাশেক টাকা পেয়েই খুশি।
আর মাস শেষে দর্জি তারেকের পাঁচতলার বাসা ভাড়া দেওয়ার টাকা নিয়ে ভাবি।
কিংবা, ছুটে বেড়াই দুধ/আইসক্রিম বিক্রেতার ছেলে/মেয়ের পেছনেই
লেখাটি বেকার শিক্ষিত সবার জন্য কাজের উৎসাহ দেবার জন্য।
মো. ইমরান হোসেনের ফেসবুক পোষ্ট থেকে
Add Comment