হ্যালোডেস্ক: ভ্রমন কার না ভারো লাগে। হাতে একটু সময় পেলেই ছুট মারতে মন চায় সবারই। একটা সময় শীতকাল ছাড়া অন্য কোনো মৌসুমে মানুষ বেড়াতে যেত না। কিন্তু দিন বদলেছে, কী শীত, কী গরম—ছুটি পেলেই দে ছুট। ভরা বর্ষায়ও ভ্রমণ পরিকল্পনা করে অনেকে। কারণ বাংলার রূপ যে বর্ষাতেই সবচেয়ে সুন্দর, সে বন্দনা আছে শত লেখকের গল্প, কবিতায়। যারা এই বর্ষায় ঘুরতে চান তাদের জন্য কয়েকটি উপযুক্ত জায়গার সন্ধান দেয়া হল।
সুন্দরবন
বর্ষার ঝর ঝর পানি সুন্দরবনকে অন্যান্য সময়ের চেয়ে অসাধারণ দেখায়। আপনারও হতে পারে ভিন্ন অভিজ্ঞতা। পুরো বন এ সময়টায় যেন সতেজ হয়ে ওঠে। বন্যপ্রাণীও দেখা যায় প্রচুর। ছয় হাজার বর্গকিলোমিটারেরও বেশি জায়গাজুড়ে ঘুরে পেতে পারেন ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ। দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের বিশাল উপকূলীয় এলাকা জুড়ে সুন্দরবনের অবস্থান। তবে ঘুরতে যাওয়ার জন্য খুলনা অংশে যাওয়াই ভালো। রয়েল বেঙ্গল টাইগারের জন্য বিখ্যাত সুন্দরবনে যেতে চাইলে কলাবাগান, কল্যাণপুর, গাবতলী থেকে বাসে করে যেতে হবে। খুলনা শহরে থাকার জন্য ভালো মানের হোটেল পাবেন। এ ছাড়া বন-বিভাগের রেস্ট হাউজগুলোতেও থাকতে পারবেন।
মুন্সিগঞ্জ
বর্ষায় বাংলার গ্রামগুলো যেন হয়ে ওঠে একেকটি অপূর্ব পর্যটন কেন্দ্র। যদি কাঁচা মাটির গন্ধসহ বৃষ্টি উপভোগ করতে চান তাহলে যেতে পারেন মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে। যারা ঢাকায় থাকেন, তাদের জন্য অল্প সময়ের সেরা গন্তব্য এটি। অনেকেই বলতে পারেন, কী আছে ওখানে? পুরোটাই দেখার মতো। গ্রামের সরু মেঠোপথ দিয়ে প্রতিদিন না হোক একবেলা তো চলাই যায়। সেখানে আছে ইছামতী নদী। নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারেন। নদীর সঙ্গেই নিমতলা বিল। হালকা স্রোতের নদী থেকেই দেখবেন বিলের জলে ফুটে আছে তারার মতো শাপলা। পানকৌড়ি উড়ে যায় মাথার ওপর দিয়ে। ছোট ছোট ডিঙিনৌকা নিয়ে রোদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শাপলা তোলার দৃশ্যও আপনার মনকে চাঙ্গা করে দেবে।
রাঙ্গামাটি
পার্বত্য চট্টগ্রামের এই জেলা যেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম লীলাভূমি। এ জেলার সাজেক ভ্যালি পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয় স্থান। বর্ষাকালে এটি অনেক বেশি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। পাহাড়ের উপর তুলার মতো মেঘ রাশি উপভোগ করতে যেতে হবে সাজেক ভ্যালিতে। এ জেলার কাপ্তাই লেক আরেকটি দর্শনীয় স্থান। ঝুলন্ত ব্রিজ অথবা তবলছড়ি ঘাট থেকে বোট ভাড়া করে কাপ্তাই লেক, শুভলং ঝরনা, বিজিবি ক্যাম্প, জুম রেস্তোরা, চা-বাগান এগুলোও ঘুরে দেখতে পারেন।
শ্রীমঙ্গল
শ্রীমঙ্গলকে অনেকেই জেলা ভেবে ভুল করে থাকেন, আসলে এটি মৌলভীবাজার জেলার একটি উপজেলা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি শ্রীমঙ্গল দেশ-বিদেশের পর্যটকের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। শ্রীমঙ্গলে রয়েছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, বাইক্কার বিলসহ নানা দর্শনীয় স্থান। বর্ষায় শ্রীমঙ্গল সাজে অপরূপ রূপে। শ্রীমঙ্গলে থাকার জন্য রয়েছে ভালো মানের বেশ কিছু হোটেল। এ ছাড়া এখানে গড়ে গ্রান্ড সুলতান টি-রিসোর্ট, দুসাই রিসোর্টসহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক মানের রিসোর্ট গড়ে উঠেছে।
নেত্রকোনার হাওর
বর্ষায় হাওর ঘুরবেন না, তা হয় নাকি! হাওর দেখতে যেতে পারেন নেত্রকোনায়। জেলার মোহনগঞ্জ, মদন, খালিয়াজুড়ি ও কলমাকান্দা উপজেলা জুড়ে কমবেশি ৫৬টি হাওর ও বিল আছে। শুকনা মৌসুমে হাওরে চাষাবাদ হলেও বর্ষায় পানিতে পরিপূর্ণ থাকে এসব হাওর-বিল। তখন এসব এলাকার একমাত্র বাহন হয় নৌকা। বর্ষাকালে হাওরের গ্রামগুলি একেকটি ছোট দ্বীপের মতো মনে হয়। এছাড়াও নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থেকে বর্ষা মৌসুমে লঞ্চে চড়ে যাওয়া যায় সুনামগঞ্জের তাহিরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে।
Add Comment