হ্যালোডেস্ক:
কানাডার ক্যালগেরিতে মঞ্চস্থ হল ঢাকার ৭০এর দশক থেকে এ পর্যন্ত সর্বাধিক জনপ্রিয় ও আলোচিত নাটক ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’। বারটোল্ট ব্রেখটের নাটক অবলম্বনে এটি রচনা করেছেন বিশিষ্ট নাট্য অভিনেতা ও সাংসদ আসাদুজ্জামান নূর এবং নির্দেশনা দিয়েছেন নাট্যজন মাহমুদুল ইসলাম সেলিম।
নাটকটি ক্যালগেরির দর্শকদের মাঝেও ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। মঞ্চের সীমিত আসন সংখ্যার কারণে টিকেট না পেয়ে অনেক দর্শককে ফিরে যেতেও দেখা গেছে। প্রবাসে নাটক মঞ্চায়নের নানান সীমাবদ্ধতার মাঝেও দর্শকদের মাঝে এই আগ্রহ সৃষ্টি এবং নাটকটির পরিশীলিত-নান্দনিক উপস্থাপনার জন্য নির্দেশক নাট্যজন সেলিম নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবী রাখেন। ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন আহমেদ আল ইমরান নিক্কন, শুভাশিস চক্রবর্তী, জান্নাতুল ফেরদৌস পপি, ইকবাল রহমান, ফারজানা সোমা, পাপ্লু পাল, তুরীন চৌধুরী, অনামিকা পূজা, গোলাম তাঞ্জিম অনিক, বিনীতা মৌ দত্ত, আরাফাত আহমেদ বাপ্পি, শরমিলা নন্দী শর্মী, সালেহা আশরাফ কান্তা, সঞ্জয় দেব রায়, লাভলী বেগম, শুভ্র দাস শুভ ও মাহমুদুল ইসলাম সেলিম।
আলোক নির্দেশনায় ছিলেন সুরঞ্জিত চন্দ, শব্দ নিয়ন্ত্রণে জয়ন্ত বসু, রূপসজ্জায় বিউটিশিয়ান ইসমত জেরিন, সেট নির্মাণে মোশারেফ মাসুদ, অভ্যর্থনায় জুবায়ের সিদ্দিকী ও সিমায়লা বুশরা জহির, স্থিরচিত্র ধারণে আলোকচিত্রি মাসরূর আহমেদ দীপক এবং নাটকটির শুরুতে দর্শকদের শুভেচ্ছা জানাতে প্রারম্ভিক সঞ্চালনায় ছিলেন রাইসা আফ্রিদা। নাটক ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’ উদ্বোধন করেন একুশে পদক প্রাপ্ত বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব অভিনেতা-নির্দেশক জামালউদ্দিন হোসেন এবং বিশিষ্ট অভিনেত্রী রওশন আরা হোসেন। অনেকদিন পর প্রচুর দর্শকের উপস্থিতিতে নির্মল আনন্দ নিয়ে ক্যালগেরিবাসী একটি ভাল নাটক উপভোগ করল, একথা বলাই বাহুল্য।
নাটক ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’ সম্পর্কে বলতে গিয়ে নাট্যজন মাহমুদুল ইসলাম সেলিম বলেন, বারটোল্ট ব্রেখট ছিলেন একজন প্রগতিশীল নাট্যকার। তার বেশিরভাগ নাটকেই উঠে এসেছে মানুষে মানুষে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের কথা, শোষণ নিপীড়নের কথা, যা বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে এখনও বিদ্যমান। এই নিগূঢ় সত্যকে তিনি কেবল হাস্যরসের মাধ্যমে নান্দনিকভাবে দর্শকদের সামনে উপস্থাপনই করতে চাননি, তাদেরকে ভাবাতেও চেয়েছেন। সেই একই ধারাতে বিশিষ্ট অভিনেতা ও বর্তমান জাতীয় সংসদের সম্মানিত সদস্য আসাদুজ্জামান নূর ৭০ এর দশকে নাটকটি সম্পূর্ণ দেশজ মেজাজে রচনা করেছিলেন, যা কোনভাবেই বিদেশী নাটকের রূপান্তর বলে মনে হয় না এবং চার দশক ধরে সমান জনপ্রিয়তা নিয়ে ঢাকার মঞ্চে অভিনীত হয়ে এসেছে। আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখনও সেই পঙ্কিলতা আমরা দেখতে পাই, প্রবাসে থেকেও আমাদের এসব ভাবিয়ে তোলে। আর তাই নটনন্দন থিয়েটার এবার এই নাটকটি মঞ্চায়নের জন্য বেছে নিয়েছে।
সূত্র: বিডি প্রতিদিন
Add Comment