হ্যালোডেস্ক
স্বাধীনচেতা টিপুর দেশাত্নবোধের দৃঢ়তার সঙ্গে খুব ভালোভাবেই পরিচিত ছিল ইংরেজ শাসকরা। তারা মোটেই স্বস্তিতে থাকত না সাহসী বীরযোদ্ধা টিপু সুলতানের ব্রিটিশবিরোধী আচরণে। তার মতো ভারতের স্বাধীনতা নিয়ে এত ভাবেননি আর কোনো শাসক। তিনি একাধারে ছিলেন প্রচণ্ড ধার্মিক মুসলিম ও অন্যান্য ধর্মের প্রতি সহানুভূতিশীল। শের-ই-মহীশুর টিপু সুলতানের সাহসী রাজ্য পরিচালনা, বিচিত্র জীবনযাপন ও প্রভাব-প্রতিপত্তি নিয়ে থাকছে বিস্তারিত আয়োজনে-
টিপু সুলতান
জন্ম: ২০ নভেম্বর ১৭৫০ এবং মৃত্যু: ৪ মে ১৭৯৯ ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের মহীশূর রাজ্যের শাসনকর্তা। তিনি একজন বীর যোদ্ধা ছিলেন। ইংরেজদের বিরুদ্ধে তিনি বীরত্ব সহকারে যুদ্ধ করেন। তিনি তাঁর শৌর্যবীর্যের কারণে শের-ই-মহীশূর (মহীশূরের বাঘ) নামে পরিচিত ছিলেন। ভারতের স্বাধীনতামাকীতার জন্য ভারতের বীরপুত্র বলা হয়। তিনি বিশ্বের প্রথম রকেট আর্টিলারি এবং বিভিন্ন অস্ত্র তৈরি করেছিল ও ফতোয়া মুজাহিদীন লিখেছেন|
দক্ষিণ ভারতের মহীশূর রাজ্যের শাসক ছিলেন টিপু সুলতান৷ পিতা হায়দার আলী মহীশূর রাজ্যের সেনাপতি ছিলেন৷ নেপোলিয়ন বোনাপার্ট তার মিত্র ছিল এবং ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধে সাহায্য করেছিল। শ্রীরঙ্গপত্তনম গ্রামে কাবেরী নদীর একটি ব-দ্বীপে নির্মিত একটি দূর্গ থেকে রাজ্য শাসন করতেন৷ বর্তমানে শ্রীরঙ্গপত্তনম গ্রাম দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের মান্ডিয়া জেলার অন্তর্গত৷ ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর সঙ্গে যুদ্ধে ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে নিহত হন। টিপুর এক সেনাপতি মীর সাদিক বিশ্বাসঘাতকতা করে ব্রিটিশদের সঙ্গে হাত মেলান৷ পরে তার পরিবারের লোকজনকে ভেলোরের দূর্গে বন্দী করে রাখে ব্রিটিশ শাসকরা৷
অত্যাধিক সাহসী ছিলেন এই বীরযোদ্ধা। ছিলেন ইংরেজদের বিরুদ্ধাচারী। তাঁর তীব্র আকাঙ্খা ছিল ভারতকে স্বাধীন করার। সেজন্য তাঁকে ভারতের বীরপুত্রও বলা হয়।
শের-ই-মহীশূর
টিপু সুলতানকে ডাকা হতো শের-ই-মহীশূর; উপাধিটা ইংরেজদেরই দেয়া। তাঁর এই বাঘ (শের) হয়ে ওঠার পিছনে অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কিত ছিলো। মূল কারণ ছিলো তাঁর অসাধারণ ক্ষীপ্রতা, দক্ষতা, বুদ্ধিমত্তা আর কৌশলপূর্ণ রাজ্য পরিচালনা – বাবার সুযোগ্য উত্তরসূরি ছিলেন টিপু সুলতান। বাবা হায়দার, ১৭৪৯ খ্রিস্টাব্দে টিপু নামে এক ফকিরের দোয়ায় এক পুত্রসন্তান লাভ করেন এবং আনন্দচিত্তে ঐ ফকিরের নামেই ছেলের নাম রাখেন “টিপু”। মহীশূরের স্থানীয় ভাষায় (কানাড়ী ভাষা) ‘টিপু’ শব্দের অর্থ হলো বাঘ। হয়তো তাঁকে ‘শের-ই-মহীশূর’ ডাকার পিছনে এটাও একটা কারণ ছিলো।
ছোটবেলা থেকেই টিপু, বাঘের গল্প শুনতে ভালোবাসতেন। বাবাই তাঁকে বাঘের গল্প শোনাতেন। কিশোর বয়সে টিপু সুলতান বাঘ পুষতে শুরু করেন। বাঘ নিয়ে তাঁর আগ্রহের শেষ ছিলো না। বাবার মৃত্যুর পর তিনি যখন সিংহাসনে আরোহণ করলেন, তখন বাবার পুরোন সিংহাসনটি তিনি ঠিক পছন্দ করলেন না। তাই তিনি তৎকালীন শ্রেষ্ঠ কারিগর দিয়ে কাঠের ফ্রেমের উপর সোনার পাত বসিয়ে তার উপর মণিমুক্তা ও রত্নখচিত একটি সিংহাসন বানিয়ে নিলেন, যাকে বরং “ব্যাঘ্রাসন”ই (Tiger throne) বলা যায়। কারণ আট কোণা ঐ আসনটির ঠিক মাঝখানে ছিলো একটি বাঘের মূর্তি। ৮ ফুট চওড়া আসনটির রেলিংয়ের মাথায় বসানো ছিলো সম্পূর্ণ স্বর্ণে তৈরি দশটি বাঘের মাথা, আর উপরে উঠার জন্য ছিলো দুধারে, রূপার তৈরি সিঁড়ি। আর পুরো ব্যাঘ্রাসনটাই ছিলো বাঘের শরীরের মতো ডোরাকাটা।
টিপু সুলতানের উপদেষ্টা হিসেবে ছিলেন পন্ডিত পুরণাইয়া। টিপু সুলতান সামরিক তালিম নেন সরদার গাজী খান এর কাছ থেকে। টিপু সুলতান ছিলেন বহুভাষায় পারদর্শী।
টিপু সুলতানের রাজ্যের প্রতীক ছিলো বাঘ। এই বাঘ ছিলো তাঁর অনুপ্রেরণার মতো। তাঁর রাজ্যের পতাকায় কানাড়ী ভাষায় লেখা ছিলো “বাঘই ঈশ্বর”। তিনি সিংহাসনে বসে মাঝে মাঝেই বলতেন-
“ভেড়া বা শিয়ালের মতো দু’শ বছর বাঁচার চেয়ে বাঘের মতো দু’দিন বেঁচে থাকাও ভালো”
তাঁর সমস্ত পরিধেয় পোষাক ছিলো হলুদ-কালো রঙে ছাপানো আর বাঘের শরীরের মতো ডোরাকাটা। তিনি যে তলোয়ার ব্যবহার করতেন, তার গায়েও ছিলো ডোরা দাগ এবং হাতলে ছিলো খোদাই করা বাঘের মূর্তি। তাঁর ব্যবহৃত রুমালও ছিলো বাঘের মতো ডোরাকাটা। তাঁর রাজ্যের সমস্ত সৈনিকের পোষাকে থাকতো বাঘের ছবি। সৈন্যদের ব্যবহার্য তলোয়ার, বল্লম, বন্দুকগুলোর নল, কুদো, হ্যামারেও আঁকা থাকতো বিভিন্ন আকারের বাঘের প্রতিরূপ কিংবা মূর্তি। এমনকি তিনি তাঁর রাজ্যের প্রধান প্রধান সড়কের পাশে, বাড়ির মালিকদেরকে বাড়ির দেয়ালে বাঘের ছবি আঁকার নির্দেশ জারি করেছিলেন। তখনও তাঁর বাঘ পোষার বাতিক যায়নি এবং রাজবাড়িতে বেশ কয়েকটি পোষা বাঘ ছিলো। তার কয়েকটি আবার তাঁর ঘরের দরজার সামনে বাঁধা থাকতো।
টিপু সুলতান
১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ সেনাপতি হেক্টর মুনরোর ও তাঁর বাহিনীর কাছে দ্বিতীয় মহীশূর যুদ্ধে টিপু ও তাঁর বাবা মারাত্মক নাজেহাল হন এবং টিপুর রাজ্যে যথেষ্ট ক্ষয়ক্ষতি হয়, নিহত হয় অনেক সৈন্য। এমনিতেই তিনি প্রচন্ড ইংরেজ বিরোধী ছিলেন, তদুপরি এই পরাজয়ে তিনি আরো বেশি তেজদীপ্ত হয়ে ওঠেন। ঘটনাক্রমে ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে হেক্টর মুনরোর একমাত্র পুত্রসুন্দরবনের সাগর দ্বীপে বাঘ শিকার করতে গিয়ে বাঘ আক্রমণে নিহত হয়। এই সংবাদ পেয়ে টিপুর মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে যায়। তিনি এই ধারণা কাজে লাগিয়ে একটি বিচিত্র খেলনা বানিয়েছিলেন, যা সারা দুনিয়ায় “টিপু’স টাইগার” (Tipu’s Tiger) নামে বিখ্যাত হয়ে আছে। ফরাসি যন্ত্রকুশলীদের দ্বারা নির্মিত প্রমাণ আকারের এই খেলনাটিতে ক্লকওয়ার্ক সিস্টেম ব্যবহৃত হয়েছিলো। খেলনায় দম দিয়ে ছেড়ে দিলে এর সাথে লাগনো একটি অর্গান পাইপ থেকে রক্ত হীম করা বাঘের প্রচণ্ড গর্জন, আর এক ইংরেজের প্রচণ্ড গোঙানির আওয়াজ বের হতো। পুরো খেলনাটি ছিলো এরকম: একজন ইংরেজ একটি বাঘের থাবার মধ্যে অসহায়ভাবে পড়ে গোঙাচ্ছে আর একটা বাঘ প্রচন্ড আওয়াজ করে সেই ইংরেজের বুকের উপর চেপে গলা কামড়ে ধরতো। তখন ইংরেজটি তার হাত উঠিয়ে চেষ্টা করতো বাঘের মাথাটি এদিক-ওদিক সরিয়ে দিতে। ভিতরকার অর্গান থেকে আরো বেরিয়ে আসতো মহীশূর সুলতানের প্রিয় গজলের সুর। “টিপু’স টাইগার” বানানোর পিছনে একদিকে যেমন ছিলো তাঁর ইংরেজদের প্রতি উষ্মা, তেমনি অন্যদিকে ছিলো প্রচন্ড ব্যঘ্রপ্রীতি। সময় পেলেই তিনি বাঘটিতে দম দিতেন; কখনও কখনও রাতের পর রাত একই জিনিস দেখে গায়ের জ্বালা মেটাতেন।
পরিবার
টিপু সুলতানের ৪ জন স্ত্রী, ১৫ জন পুত্র এবং কমপক্ষে ৮ জন কন্যা সন্তান ছিল। কন্যাদের পরিচিতি অজানাই রয়ে যায়।
সন্তানদের নাম ও বিবরণ
সন্তানদের নাম জীবনকাল
০১ শাহজাদা হায়দার আলী সুলতান ১৭৭১ – ৩০ জুলাই ১৮১৫
০২ শাহজাদা আব্দুল খালিক সুলতান ১৭৮২ – ১২ সেপ্টেম্বর ১৮০৬
০৩ শাহজাদা মুহি-উদ-দীন সুলতান ১৭৮২ – ৩০ সেপ্টেম্বর ১৮১১
০৪ শাহজাদা মু’ইজ-উদ-দীন সুলতান ১৭৮৩ – ৩০ মার্চ ১৮১৮
০৫ শাহজাদা মি’রাজ-উদ-দীন সুলতান ১৭৮৪? – ?
০৬ শাহজাদা মু’ইন-উদ-দীন সুলতান ১৭৮৪? – ?
০৭ শাহজাদা মুহাম্মদ সুবহান সুলতান ১৭৮৫ – ২৭ সেপ্টেম্বর ১৮৪৫
০৮ শাহজাদা মুহাম্মদ শুকরুল্লাহ সুলতান ১৭৮৫ – ২৫ সেপ্টেম্বর ১৮৩৭
০৯ শাহজাদা সারওয়ার-উদ-দীন সুলতান ১৭৯০ – ১৮৩৩
১০ শাহজাদা মুহাম্মদ নিজাম-উদ-দীন সুলতান ১৭৯১ – ২০ অক্টোবর ১৭৯১
১১ শাহজাদা মুহাম্মদ জামাল-উদ-দীন সুলতান ১৭৯৫ – ১৩ নভেম্বর ১৮৪২
১২ শাহজাদা মুনির-উদ-দীন সুলতান ১৭৯৫ – ১ ডিসেম্বর ১৮৭৩
১৩ শাহজাদা গুলাম মুহাম্মদ সুলতান, কেসিএসআই মার্চ ১৭৯৫ – ১১আগস্ট ১৮৭২
১৪ শাহজাদা গুলাম আহমদ সুলতান ১৭৯৬ – ১১ এপ্রিল ১৮২৪
১৫ শাহজাদা ? সুলতান ১৭৯৭ –
ধর্মীয় নীতিমালা
ব্যক্তিগত পর্যায়ে টিপু ধার্মিক মুসলিম ছিলেন। নিয়মিত প্রার্থনা করতেন এবং তার এলাকার মসজিদ গুলোর উপর তার বিশেষ নজরদারি ছিল। একটি হিন্দু রাষ্ট্রের মুসলিম শাসক হিসেবে তার কিছু নীতিমালা বিতর্কের সৃষ্টি করে। মূলধারার দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনামতে টিপু সুলতানের শাসনব্যবস্থা সহনশীল ছিল। তাঁর শাসনকালে তিনি ১৫৬ টা হিন্দু মন্দিরে নিয়মিত অর্থ বরাদ্দ দিতেন বরাদ্দ পাওয়া এরকম এক বিখ্যাত মন্দির হলো শ্রীরাঙ্গাপাটনার রঙ্গন অষ্টমী মন্দির।
তার শাসনকার্য যদি ধর্মীয় দিক থেকে বিশ্লেষণ করা হয় তাবে তা নিয়ে ভারতে বেশ কিছু দ্বিমত রয়েছে। কেউ তাকে মনে করে গাজী বা তিনি বিশ্বাস এর জন্য শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা। অন্যদিকে অনেকে তাকে মনে করেন তিনি এক ধর্মান্ধ মুসলিম যে হিন্দু ও খ্রিষ্ঠানদের উপর গণহত্যা চালিয়েছে।
তিনি বেশ কিছু সম্প্রদায়ের ওপর অবরোধ আরোপ করেছিলেন। তার এ অবরোধ আরোপের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল কোরোগের হিন্দুরা ম্যাঙ্গালোরের খ্রিস্টানরা, মালাবারের নাইর, মালাবাবের মাফিলা মুসলিম, মহাদেবী মুসলিম, সোহানুর এবং নিজামবাদ জেলার নবাব। এ অবরোধ আরোপের পিছনে ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক উভয় কারণই দায়ী ছিল।
ব্রিটিশদের বর্ণিত ইতিহাস
ব্রিটলব্যাংক, হাসান, চেটি, হাবিব এবং সালেটারে এবং অন্যরা মনে করেন হিন্দু খ্রিষ্ঠানদের প্রতি টিপু সুলতানের আচরণের যে ইতিহাস প্রচলিত আছে তা প্রথমদিকের ব্রিটিশ ঐতিহাসিক (এসব গ্রন্থপ্রণেতারা টিপুর স্বাধীন চেতার বিরোধী ছিলেন) বিশেষত কির্কপ্যাট্রিক এবং মার্ক উইলকস, এর মত ঐতিহাসিকদের প্রণীত ইতিহাস। তাদের কাজ সম্পুর্ণভাবে নির্ভরযোগ্য নয়, এবং সম্ভবত সত্যের সাথে সুকৌশলে অনেক মিথ্যা মিশিয়ে দিয়েছেন। এ. এস শেঠী মনে করেন উল্কের ইতিহাস কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য নয়।
ইরফান হাবিব এবং মহিবুল হাসান এ বিষয়ে যে বলতে গিয়ে বলেন পূর্বোক্ত ব্রিটিশ গ্রন্থ প্রণেতাদের মধ্যে টিপু সুলতান কে নিষ্ঠুরভাবে উপস্থাপন করার জন্য একপ্রকার প্রবণতা ছিল। ইতিহাসে টিপুকে এভাবে চিত্রায়িত করতে পারলে দিনশেষে ব্রিটিশদেরই উপকার হয়, কারণ ব্রিটিশরা টিপু সুলতান এর কবল থেকে মাইসোর মুক্ত করেছিল। আর নিষ্ঠুরতার সাথে টিপুকে চিত্রায়িত করতে পেরে ব্রিটিশ ঐতিহাসিকরা এটাই বুঝাতে চেয়েছে, মাইসোরবাসীকে টিপুর মত অত্যাচারী শাসকের কবল থেকে মুক্ত করে ব্রিটিশরা তাদের জন্য শান্তির দূত হিসেবে এসেছে। ব্রিটলব্যাংকের সাম্প্রতিক কাজেও একই ধরনের বক্তব্য প্রতিধ্বনিত হয়েছে। তার লেখনীতে উঠে এসেছে যে কির্কপ্যাট্রিক এবং উইলকের কাজ খুবই সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তার কারণ এই দুই ঐতিহাসিক শুধুমাত্র ইতিহাসই লিখেননি তারা উভয়ই টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং তারা অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে লর্ড কর্নওয়ালিস এবং রিচার্ড ওয়েলসলি, প্রথম মার্কোয়েস ওয়েলসীর প্রশাসনের সাথে যুক্ত ছিলেন।
এরূপ কিছু যুক্তি ধোঁয়াশায় পূর্ণ কারণ এমনকি সাম্প্রতিক ফরাসি তথ্যগুলোও টিপু সুলতানের নিষ্ঠুরতার সাক্ষ্য দেয়। ফরাসিরা ছিল টিপু সুলতানের মিত্র শক্তি তারা একত্রে টিপু সুলতানের সাথে যুদ্ধ করত। এরকমই একজন ফরাসি সৈনিক যার নাম ফ্রাঙ্কোইস ফিডেলে রিপাউড ডে মন্টাউডেভার্ট, তিনি তার দিনপঞ্জিকায় ১৪ জানুয়ারী ১৭৯৯ সালে লিখেন, “টিপুর সাধারণ হিন্দুদের উপর আচরণের জন্য আমি বিরক্ত। ম্যাঙ্গালোর দখলের সময়, টিপুর সৈন্যরা নিয়মিতভাবেই নিরীহ ব্রাহ্মণদের মাথা কেটে ফেলে”।
ঊনবিংশ শতাব্দীর একেবারে শুরুর দিকে অর্থাৎ টিপু সুলতানের মৃত্যুর পরপরই অনেকগুলো লোকসংগীত ও শোকগাঁথা রচিত হয়, যা কালের ধারাবাহিকতায় এখনও জনপ্রিয়। কর্ণাটকের লোকসাহিত্যের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ব্রিটিশবিরোধী হাতেগোনা কিছু গোত্রপতি ছাড়া আর কোনো সম্রাটকে নিয়ে কর্ণাটকে শোকগাথা রচিত হয়নি। আর এই শোকগাথা বা ‘লাভানা’গুলোর জনপ্রিয়তাই এই নেতার গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে ইঙ্গিত দেয়।
টিপুর মৃত্যুতে ভারত হারায় অভিভাবক ব্রিটিশ করে আনন্দ।
আমাদের সাথে সংযুক্ত থাকতে লাইক বাটনে ক্লিক করুন।
Add Comment