হ্যালোডেস্ক
এক সময় খাল-বিল জলাশয়ে দেখা মিলতো অজস্র শাপলা ফুল। লাল-সাদা শাপলা ফুল দেখে মুগ্ধ হতো মানুষ। কিন্তু কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে জাতীয় এ ফুল। সাধারণত বর্ষা মৌসুমে খাল-বিল এমনকি জলাশয়ে প্রাকৃতিকভাবেই জন্ম নেয় শাপলা। আবহমান কাল ধরেই শাপলা মানুষের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল।
গ্রামের স্বল্প আয়ের মানুষ শাপলা-শালুক আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করত। এখন অধিকাংশ খালবিল জলাশয় ভরাট হয়ে যাওয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে জাতীয় ফুল শাপলা। জানা যায়, সাদা বর্ণের শাপলা সবজি হিসেবে এবং লাল রঙের শাপলা ওষুধি গুণ হিসেবে ব্যবহার হয়।
কিন্তু বাড়তি জনসংখ্যার চাপে জলাশয় ভরাট করে তৈরি করা হচ্ছে বাড়ি-ঘর। এ ছাড়াও জমিতে উচ্চফলনশীল জাতের ফসল আবাদে অধিক মাত্রায় রাসায়নিক সার প্রয়োগ, জলাশয়ে পানি না থাকার কারণে বিলুপ্ত হতে চলেছে শাপলা ফুল। আগে অনেকে সৌন্দর্যের জন্য পুকুরে চাষ করতেন লাল শাপলা।
বর্ষার শুরু থেকে শরৎকালের শেষ সময় পর্যন্ত শাপলা ফোটে। বর্ষার শুরুতে শাপলার জন্ম হলেও হেমন্তেও চোখে পড়ে রঙবে রঙের শাপলা। বাহারি এসব ফুল দেখে চোখ জুড়িয়ে যাবে যে কারো।
গ্রামঞ্চলের মানুষরা বিল থেকে শাপলা ফুলের ঢেপ ফল নিয়ে আসে। অনেকে এ ফল পছন্দ করে। ঢেপের ভেতরে ছোট ছোট বীজ থাকে। ওই বীজ গুলো নিয়ে ভেঙে রোদে শুকিয়ে খই ভেজে খাওয়া যায়। এ খই খুবই সুস্বাদু।
আগে আমার বাড়ির পাশের নদী কিম্বা খাল বিলে শাপলা ফুল দেখা যেত। কিন্তু এখন আর খুব একটা দেখা মেলে না এ ফুলের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, শাপলা আবদ্ধ জলাশয়ে জন্ম নেয়, যে জলাশয়ে গুলোতে থাকার কথা ছিল শাপলার সেখানে ধানসহ বিভিন্ন আবাদি ধান চাষ হচ্ছে। আবার অনেকে এসব জলাশয়ে ভরাট করে বাড়ি-ঘরও নির্মাণ করছেন। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ফসল চাষ করায় শাপলা ফুলের জন্ম নেওয়ার ক্ষেত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও কচুরি পানার করণেও বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। তাই নদী, নালা, খাল, বিলে তেমন একটা শাপলা ফুল দেখা যাচ্ছে না।
ছবি: ইমরুল হক ইমন, গোপালগঞ্জ
Add Comment