হ্যালোডেস্ক
তালাকের নোটিশ ফাঁস হওয়ায় বেজায় ক্ষেপেছেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শারমীন নাহিদ নূপুর ওরফে শাবনূর। তিনি বলেন, আমার আইনজীবী কোনোভাবেই এটা করতে পারেন না। অনুমতি ছাড়া তিনি কোনোভাবেই এই নোটিশ প্রকাশ করতে পারেন না।
তবে শাবনূরের তালাকের নোটিশ জনসমক্ষে প্রকাশের কথা অস্বীকার করেছেন তার আইনজীবী কাওসার আহমেদ। এ বিষয়ে তিনি কাউকে কোনো তথ্য দেননি বলেইও দাবি করেন। কাওসার আহমেদ বলেন, বিচ্ছেদের বিষয়ে তিনি কাউকে কোনো ধরনের তথ্য দেননি।
‘এটা আমার প্রকাশ করার কিছু নেই। আমি কাউকে কোনো তথ্য দিইনি। আমাকে পত্রিকা থেকে জিজ্ঞেস করেছে, এই ধরনের কিছু হয়েছে কিনা। আমি শুধু বলেছি– হয়েছে।’
নোটিশ পাঠানোর কথা সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, কি হচ্ছে-না-হচ্ছে এটি বলার তো আমি কেউ না।
স্বামীর সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদের আনুষ্ঠানিকতা একেবারে গোপনে করতে চেয়েছিলেন শাবনূর। আইনজীবীকে নিয়ে শাবনূর বললেন, তাকে নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া আর কিছুই মুখে আসছে না।
বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বসবাস করছেন এই অভিনেত্রী। গণমাধ্যমকে তিনি জানান, আমার বিচ্ছেদ একান্তই আমার ব্যক্তিগত। এটা নিয়ে কেউ কথা না বললেই ভীষণ খুশি হব। তাই বিষয়টার আইনগত সমাধান চেয়ে আইনজীবীর দ্বারস্থ হই।
আইনজীবীর পেশাগত সততা বজায় রাখা উচিত ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, একটা দরখাস্ত দিয়েছি, সেটা যদি না জানিয়ে জনসমক্ষে প্রকাশ করা দুঃখজনক।
তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে আইনজীবীর সঙ্গে কথাও বলব, কেন এমনটা করলেন। একজন আইনজীবী হিসেবে এটা তিনি খুবই অন্যায় করেছেন।
এদিকে শাবনূরের সঙ্গে সম্পর্ক থাকাকালীন তার স্বামী অনিক মাহমুদ দ্বিতীয় বিয়ে করেন। প্রায় চার বছর আগেই তিনি এ বিয়ে করেন। তার দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম আয়েশা।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চাননি আয়েশা। তার কাছে বিষয়টি জানতে চেয়ে ফোন করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন। তবে এ বিয়ের বিষয়ে অনিকের সেই আত্মীয়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করেন।
পরবর্তীতে আবারও জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনিক কী করেছে সেটা ও নিজেই বলবে। এখানে আমার কিছু বলার নেই। গত কয়েক বছর ধরেই অবশ্য গুঞ্জন ছিল, স্বামী অনিকের সঙ্গে থাকছেন না শাবনূর। অনেকে বলেছেন, সংসার ভেঙে গেছে।
তবে সেসব গুঞ্জন বরাবরই অস্বীকার করে এসেছেন এ নায়িকা। এবার সেসব গুঞ্জন নিজেই সত্যি প্রমাণ করলেন তিনি।
বনিবনা না হওয়ায় স্বামী অনিক মাহমুদ হৃদয়কে তালাক দিয়েছেন তিনি। ২৬ জানুয়ারি এ নায়িকার স্বাক্ষর করা একটি তালাক নোটিশ অ্যাডভোকেট কাওসার আহমেদের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে স্বামীর ঠিকানায়।
তালাক নোটিশের অনুলিপি অনিকের এলাকার আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারম্যান এবং কাজী অফিস বরাবরও পাঠানো হয়েছে। নোটিশে সাক্ষী হিসেবে নুরুল ইসলাম ও শামীম আহম্মদ নামে দুজনের নাম উল্লেখ রয়েছে।
তালাক নোটিশের বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি বাধ্য হয়েই তালাক নোটিশ পাঠিয়েছি। আসলে আমার কিছু করার নেই। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আইজান (শাবনূরের সন্তান) জন্মের পর থেকেই আমাদের সম্পর্কটা নষ্ট হয়ে গেছে। প্রায় ছয়টা বছর নীরবে তার অত্যাচার সহ্য করেছি।
তিনি বলেন, চেয়েছি সংসারটা আগলে রাখব। কিন্তু পারিনি। আইজান পৃথিবীতে আসার পরপরই বদলে যেতে থাকে অনিক। স্বামী হিসেবে তার দায়িত্বহীনতা ও সংসারের প্রতি উদাসীনতা আমাকে হতাশ করে তোলে। তার মধ্যে নানা পরিবর্তন লক্ষ করলাম। একেবারেই বদলে গেছে সে।
কিন্তু আপনি কী স্বামীকে শোধরানোর চেষ্টা করেননি কিংবা সংসার টিকিয়ে রাখতে কোনো উদ্যোগ নেননি? এমন প্রশ্নের উত্তরে শাবনূর বলেন, অবশ্যই চেষ্টা করেছি। অভিমান করে তার থেকে দূরেও গেছি। ভাবলাম হয়তো মায়ার কারণে হলেও আমাদের কাছে ফিরে আসবে। কিন্তু না, আমার সেসব ভাবনা ভুল ছিল।
তিনি জানান, অনেক আগে থেকেই আমরা আলাদা থাকছি। দফায় দফায় বিষয়টি মিটমাট করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। বাধ্য হয়েই ২৬ জানুয়ারি অনিককে ডিভোর্স নোটিশ পাঠিয়েছি।
কিন্তু আপনি তো আগে বরাবরই বলে এসেছেন আপনার সংসারে কোনো অশান্তি নেই, সুখেই আছেন আপনারা। তা হলে এতদিন পর এসে এখন কেন এসব অভিযোগ করছেন? জানতে চাইলে শাবনূর বলেন, ‘স্ত্রী হিসেবে এতদিন আমি তার সম্মান রক্ষা করতে চেয়েছি। পাশাপাশি আমারও সম্মান আছে। চেষ্টা করেছি তাকে বোঝাতে। তাই বাধ্য হয়ে কিছুটা মিথ্যা বলেছি। শেষ পর্যন্ত আর পারছি না বলেই তালাকের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর যেটিকে অভিযোগ বলেছেন, সেটি আমি গণমাধ্যমে করিনি। আমার প্রতি যেসব অন্যায় করা হয়েছে, সেটি তালাক নোটিশে উল্লেখ করেছি।
Add Comment