-মিলন মাহমুদ রবি
নারীর সৌন্দর্য তাঁর রুপে লুকিয়ে আছে এমন ভেবে অনেক নারীই ভাব ধরে থাকেন! আসলে সৌন্দর্য’র বিষয়টা নারীর সাথেই মানানসই। এমন বিশেষণে অনেকে সাচ্ছন্দবোধও করেন। কেউ কেউ মনে করে থাকেন সুন্দর চেহারা এবং আকর্ষণীয় দৈহিক সৌন্দর্যের অধিকারিণী হলেই তিনি সকলের চোখে হয়ে উঠবেন অতুলনীয় রূপসী।
আমাদের সমাজের পরিপ্রেক্ষিতে এমনটা ভাবা খুব বেশি ভুল নয়। কারণ এ সমাজে ‘আগে দর্শনদারি, পরে গুণ বিচারী’ নীতিতে বিশ্বাসী! আর তাই মেকআপের প্রলেপ দিয়ে ডায়েট করে সকলের চোখে রূপসী হতে চান সকল নারীই। কিন্তু আসলেই কি এই মেকআপ এবং আকর্ষণীয় চেহারার কারণেই নারীরা হয়ে উঠেন রূপসী? অনেক নারী আবার নজর কারার জন্য নানান ঢঙে চালচলন করে থাকেন। এসবে কি আসলেই নজর কারে? মোটেই নয়। বরং নারীর সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে অন্যখানে।
একজন নারী কিছু বিশেষ গুণেই হতে পারেন অতুলনীয় ও সুন্দরী।
নারীর আবেগ
গরবিনি, আবেগী এবং স্বাধীনচেতা- বাঙ্গালি নারীর সাথে এই তিনটি চরিত্রই মানায়। আবেগ যেমন তাঁদের দ্রুত স্পর্শ করে, তোমনি স্বাধীনতার প্রশ্নেও সত্যিকার অর্থে অনড়। একজন আবেগবিহীন নারী যতো সুন্দরীই হোন না কেন তাঁর সকল সৌন্দর্যই বৃথা। নারীকে অপূর্ব করে তোলে তার মেয়েলী আবেগগুলো। তার সকল ব্যাপারে ইমোশনাল হয়ে পরা, যে কোনো সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা, ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা সবই একজন নারীর অনেক বড় গুন ও সৌন্দর্য।
কোমল হৃদয়
নারীর সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে তার মায়া মমতায়। নারী মানেই মায়া মমতাপূর্ণ একজন মানুষ। কারণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ‘মা’ সেখানেও নারী। কথায় বলে মেয়েরা মস্তিষ্ক দিয়ে নয় হৃদয় দিয়ে চিন্তা করেন। তাঁর অন্যের দুঃখে দুঃখী হওয়ার মানসিকতায়, সহানুভূতি এবং সহমর্মিতা ও বটে। এসব কিছু একজন নারীর সৌন্দর্যের অংশ।
বুদ্ধিমত্তা
‘সুন্দরী মেয়েদের বুদ্ধি কম, এবং যার বুদ্ধি রয়েছে তিনি সুন্দরী নন’ এমন কথা আমাদের সমাজে প্রচলিত রয়েছে। এই ধরণের অদ্ভুত তথ্য মেয়েদের ছোট করার অস্ত্র ছাড়া কিছুই নয়। একজন নারী তিনি দেখতে যেমনই হোক না কেন তার রয়েছে নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা। আর এই বুদ্ধিমত্তাই নারীর আসল সৌন্দর্য।
ব্যক্তিত্ব
নারীর মধ্যকার আসল সৌন্দর্য হচ্ছে তার ব্যক্তিত্ব। এটা নারীর অহংকারের একটা অংশ। একজন রমণী হিসেবে তার বাহ্যিক সৌন্দর্যটাই মুখ্য নয়। তাঁর চিন্তাচেতনা ভাবনা সব কিছু একজন নারীর ব্যক্তিত্বেই থাকে। তখনই নারীর আসল সৌন্দর্য ফুটে উঠে।
আত্মবিশ্বাসী নারী
একজন আত্মবিশ্বাসী নারী নিজের ভেতরের সৌন্দর্য খুব ভালো করেই প্রকাশ করতে পারেন। আত্মবিশ্বাস একজন মানুষকে অনেক বেশি মাত্রায় সুন্দর করে তোলে। নারীর মধ্যকার এই আত্মবিশ্বাসের অপূর্ব ছটা তার ব্যক্তিত্বকে আরও বেশি প্রস্ফুটিত করে। ঠিক তখনই নারী হয়ে উঠেন একজন অনন্যা।
কর্মদক্ষতা
আমাদের সমাজে দুর্বল প্রকৃতির ও অসুন্দর নারীকে বেশিই অবহেলা করা হয়ে থাকে। কিন্তু সকলেই ভুলে যায় সন্তান জন্মদানের মতো সব চাইতে কঠিন কাজটির ক্ষমতা সৃষ্টিকর্তা একজন নারীকেই দিয়েছেন। একজন নারীর সৌন্দর্য প্রকাশ পায় তাঁর কাজের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং পরিপূর্ণ প্যাশনের মাধ্যমে। একজন নারী কতোটা দক্ষ সেটা তার কাজের মাধ্যমেই বিচার হয়। আর এটাও নারীর সৌন্দর্যের বড় একটা অংশ।
Add Comment