সাময়িকী: শুক্র ও শনিবার
―মিলন মাহমুদ রবি
এক শীতের রাতে আমার হৃদয়ে মৃত্যু হয়েছিল। সে রাতে বাইরে শিশির ঝরছিলো, বাড়ির পিছনের বাঁশবাগান থেকে প্যাঁচার গান, বাব্বা সে কি ভয়ংকর! জানলা খুলতেই শিশিরে ভেজা হলুদ পাতারা ঝরে পড়ছে।
―এদিকে পউষের মধ্যরাত, কোকিল ডাকছে।
―গ্রামের দূর মোহনায় শিয়াল দলের হুঙ্কার শোনা যাচ্ছে।
―ঘরের সাথে খেজুর গাছটা থেকে টপটপ করে শিশির বিন্দু পড়ছে টিনের চালে।
―শীত রাতও ভাবছে তোমায়, সাথে রাত জাগা আমি!
―কোন এক বসন্ত বিকেলে দেখা। তারপর কত বসন্ত এলো গেলো ক’ই পেলাম তোমার সাড়া!
―শত বসন্ত অতীত হলো এ দু’চোখে, কিন্তু সেই বসন্ত বিকেল কই? কত না প্রচারণা তোমার খোঁজে।
―তোমার পাড়ার চৌরাস্তার মোড়ে নিতাই কাকা’র চায়ের দোকানে প্রতিদিন বিকেলের চায়ের সাথে সময় কাটানো।
―কোনো একদিন বসন্ত বিকেল আসবে বলে!
―কত যে কোকিল স্থবির হলো এ হৃদয়ের কাছে, হলে না শুধু তুমি! অবশ্য তুমি স্থবির নও!
―চুম্বকের মতো আকর্ষণ করতো আমায় সেই বসন্ত বিকেল আর তোমার পাড়ায় অবচেতন মনে যাওয়া আসা!
―এক বিকেলে নিতাই কাকার ছেলে পরশ শোনালো সানাই আর পালকিতে চড়ে চলে যাওয়ার কথা!
―এখন বসন্ত ছাড়া সব ঋতু’ই বিবর্ণ মনে হয়। আকাসের তারাগুলো খসে-খসে পড়ে চোখের সামনে।
―রাতকে বলি দিনের কথা, দিনকে বলি আঁধার নামবে কখন? কে শোনে কার কথা। সে তার নিয়মেই…
― হঠাৎ আজ মনে হলো সেই সেই চিকুন কন্ঠস্বর।
― নিস্তব্ধ পৃথিবী, রাতকে করি আলিঙ্গন! বিছানায় এপাশ ওপাশ!!
―কোনোদিন আর আসবে না সেই বসন্ত বিকেল, আর যাওয়া হবে না চৌরাস্তার ওই মোড়ে।
Add Comment