হ্যালোডেস্ক
ফ্যাশনে বেছে নিন সানগ্লাস
ফ্যাশনে তো সানগ্লাসেই, রোদ থেকেও চোখকে বাঁচায় সানগ্লাস। এখন সব বয়সের মানুষকেই কমবেশি সানগ্লাস পরতে দেখা যায়। তবে তরুণদের কাছে এটি ফ্যাশন অনুষঙ্গ হিসেবে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। সানগ্লাস পরার নেই কোনো দিন। সব ঋতুতে সবসময়ই এর ব্যবহার করা যায়। কেননা, এটি শুধু প্রয়োজন নয়, ফ্যাশন অনুষঙ্গও বটে। রৌদ্রোজ্জ্বল তাপ আর বাইরের ধুলোবালি থেকে চোখকে সুরক্ষিত রাখে সানগ্লাস।
ফ্যাশন তো হয় বটেই, রোদ থেকে চোখ বাঁচায় সানগ্লাস। ছেলেদের ফ্যাশন অনুষঙ্গের মধ্যে অন্যতম এই সানগ্লাসের ব্যবহার এখন অনেক বেড়েছে। তবে এক সময় একটি ধারণা বেশ প্রচলিত ছিল। সানগ্লাস কেবল গরমের দিনের অনুষঙ্গ। সেই প্রচলিত ধারণা থেকে বেরিয়ে এসেছে ফ্যাশন সচেতন মানুষ।
শুধু গ্রীষ্মকালেই নয়, শীত এবং মেঘলা দিনেও সূর্যের ইউভি রশ্মি আমাদের চোখের জন্য ক্ষতিকর। তার ওপর বাড়তি ঝামেলা হলো, বাইরের ধুলোবালি। অনেক সময় আমরা তা টের না পেলেও সময়-অসময়ে আমাদের চোখ জ্বলে ও লাল হয়ে যায়। ধুলোবালি আর খোলা বাতাসে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের শিকার হয় আমাদের চোখ। এসব থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হচ্ছে সানগ্লাস।
আর এই সানগ্লাস ব্যবহারের চর্চাও বেশ পুরনো। তথ্য বলছে, রোমান সম্রাট নিরো প্রথম সানগ্লাসকে সাধারণ মানুষের সামনে নিয়ে আসেন। এরও আগে প্রচলিত ছিল গগলস নামের এক বিশেষ চশমা। নিরোর কাছাকাছি সময়ে চীনের মানুষও সানগ্লাসের ব্যবহার করত বলে জানা যায়। বিশেষ করে, খনিতে কাজ করা লোকজন। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
কেমন সানগ্লাস ব্যবহার করবেন?
আমরা অনেকেই জানি না সানগ্লাস ব্যবহারেরও নির্দিষ্ট কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে। কেনার আগে এমন সানগ্লাস কিনুন যা অন্তত ৯৯% থেকে ১০০% সূর্যের ইউভিএ এবং ইউভিবি রশ্মি থেকে চোখকে বাঁচাতে সক্ষম। উইভি ৪০০ এর লেবেলযুক্ত সানগ্লাস মানব চোখকে সুরক্ষিত রাখে। সুতরাং কেনার আগে এসব দেখেশুনে কেনা উচিত। এ ছাড়া পোলারাইজড লেন্সযুক্ত সানগ্লাস সূর্যের কড়া আলো থেকে শুধু বাঁচায় না, চারপাশকে অনেক বেশি পরিষ্কার দেখায়। তবে কেনার আগে নিজের প্রয়োজনীয়তা বুঝে কেনা উচিত। এই যেমন- আপনি কতক্ষণ বাইরে কাটাবেন, সেই অনুযায়ী বেছে নিন আপনার সানগ্লাস। পোলারাইজড লেন্স ওয়াটার, বরফ ও কাচ থেকে প্রতিফলিত আলোক রশ্মি কমাতে সাহায্য করে। আর এসব সানগ্লাস বেড়ানো এবং ড্রাইভিংয়ের জন্য সর্বাধিক উপযোগী।
মুখের গড়ন বুঝে সানগ্লাস
বড় ফ্রেমের সানগ্লাস পরা নিঃসন্দেহে আজকালকার ফ্যাশন। তবে মুখের গড়ন বুঝে সানগ্লাস বেছে নেওয়া উচিত বলে মনে করেন ফ্যাশনবোদ্ধারা। অন্যথায় বেঢপ দেখাবে বলে সতর্ক করেন তারা। তাদের মতে, এমন সানগ্লাস কিনবেন তা যেন কপাল ঢেকে না ফেলে। আবার খেয়াল রাখতে হবে, মুখের তুলনায় খুব বেশি বড় ফ্রেমের সানগ্লাস ব্যবহারে মাথা ব্যথা হতে পারে। চাপ পড়তে পারে কানের পাশে, নাকের ওপরও। সুতরাং সানগ্লাস হওয়া চাই সামঞ্জস্যপূর্ণ। ছেলেদের মুখের গড়ন ৪ থেকে ৯ ভাবে শনাক্ত করে রোদচশমা তৈরি করছে অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান। তবে সাধারণত চার ধরনের মুখের গড়ন বেশি দেখা যায়। এর মধ্যে আছে গোলাকার, ডিম্বাকৃতি, চারকোনা ও পানপাতার মতো বা হৃদয়াকৃতি মুখের গড়ন। যাদের চেহারা গোলাকার, তাদের পাতলা, কৌণিক সানগ্লাস ভালো দেখাবে। তবে মুখ ডিম্বাকৃতির হলে সুবিধা বেশি। কারণ, এমন চেহারায় সব ধরনের সানগ্লাস মানিয়ে যায়। চেহারা যদি চারকোনা গড়নের হয়, তবে এই ধরনের চেহারায় আয়তক্ষেত্রাকারের সানগ্লাস বেশ মানায়। আবার পানপাতার মতো মুখের গড়ন হলে অ্যাভিয়েটর বা জ্যামিতিক আকারের সানগ্লাস ব্যবহার করতে পারেন।
ফ্যাশন ট্রেন্ডে সানগ্লাস
সানগ্লাসের ফ্যাশনে এখন গাঢ় রং খুব ট্রেন্ডি। নীল, সবুজ, লাল, কমলার মতো রঙের প্রাধান্য দেখা যায়। চাইলে কয়েকটা শেডের সানগ্লাসও পাবেন। আয়োজনভেদে বেছে নিতে পারেন সানগ্লাস। ক্লাব মাস্টার ফ্রেম, ফরমাল বা ঘরোয়া দুই ধরনের অনুষ্ঠানেই মানিয়ে যায়। আর এভিয়েটর ফ্রেম ফরমাল পোশাকে বেশি মানানসই। গেল বছরের ট্রেন্ড অনুযায়ী এখন ফ্যাশনে ইন ওভারসাইজড সানগ্লাস, রেট্রো স্টাইল আর সেমি রিমলেস সানগ্লাস। তাছাড়া, উজ্জ্বল রঙের শেডের সানগ্লাসেও স্টাইলিশ দেখাবে।
জেনে নিন
দাম দিয়ে ডিজাইনের সানগ্লাস কেনা মানেই চোখের পক্ষে তা দারুণ ভালো, এ ধারণাও ভুল। নির্ভরযোগ্য দোকান থেকে বাজেট বুঝে কিনে ফেলুন পছন্দের সানগ্লাস। যে কোনো সানগ্লাস পরার পর চারদিক দেখে নিশ্চিত হবেন যে ইমেজ-ডিসটিশন হয় কিনা। সানগ্লাসের ফ্রেম মেটাল বা প্লাস্টিকের হতে পারে, কিন্তু যদি আপনার স্কিনে ইরিটেশন বা অ্যালার্জির সম্ভাবনা থাকে, তা হলে স্টেইনলেস স্টিলের ফ্রেম নিন। এমন চশমাও আজকাল পাওয়া যায়, যার ফ্রেমও বদলে বদলে পরা যায়। তাতে সানগ্লাস পরাও হবে সঙ্গে হবে স্টাইলও।
Add Comment