রকমারি

বিশ্ব বন্ধু দিবসে অটুট থাকুক সবার বন্ধুত্ব

হ্যালোডেস্ক

বন্ধুত্ব কী:
‘বন্ধু’ শব্দটি ছোট, কিন্তু এর গভীরতা অনেক। বন্ধুত্বের জন্য কোনো নির্দিষ্ট দিনক্ষণ লাগে না। বন্ধুত্বের ব্যাপ্তি সীমাহীন। তবে এও ঠিক, বন্ধুত্বের কোনো বয়সসীমা নেই। ৪ আগস্ট, বিশ্ব বন্ধু দিবস। সমবয়সীও যেমন বন্ধু হতে পারে, তেমনি বয়সে ছোট-বড়রাও বন্ধু হতে পারে। মনের মিল হলেই বন্ধু হওয়া যায়। প্রতি বছর আগস্ট মাসের প্রথম রবিবারে সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হয় বিশ্ব বন্ধুত্ব দিবস।

ইতিহাস:
বন্ধুত্ব দিবস হলমার্ক কার্ডের প্রতিষ্ঠাতা “জয়েস হল” দ্বারা উন্নীত হয়েছিল ১৯১৯ সালে এবং আগস্টের প্রথম রবিবার বন্ধুত্ব দিবস এবং এই দিন সবাই একে অন্যেকে কার্ড পাঠাত। কিন্তু, বন্ধুত্ব দিবসের ইতিহাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু। ১৯৩৫ সালে, মার্কিন কংগ্রেস ঘোষণা করেন যে আগস্ট মাসের প্রতি প্রথম রবিবার বন্ধুত্ব দিবস হিসেবে প্রতিপালিত হবে। সেই থেকে বন্ধুত্ব দিবস হয় জাতীয় উদযাপিত দিনগুলোর মধ্যে একটি। খুব শীঘ্রই এটি খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব দিবস এর রুপ লাভ করে। বিশ্ব বন্ধুত্ব দিবস ধারণাটি ১৯৫৮ সালের ২০ জুলাই ডঃ Artemio Bracho দ্বারা প্রস্তাবিত হয়, যখন তিনি তাঁর বন্ধুদের সাথে “পুয়ের্তো Pinasco” তে (নদীর তীরে একটি শহর যা উত্তর Asuncion, Paraguay থেকে প্রায় ২০০ মাইল দূরে অবস্থিত) ডিনার করছিলেন। কিন্তু বন্ধুত্ব দিবস বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন তারিখে পালন করা হয় প্রথম বিশ্ব বন্ধুত্ব দিবস ৩০ জুলাই করার জন্য প্রস্তাবিত হয়ে ছিল ১৯৫৮ সালে। ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘ বিশ্বময় বন্ধুত্বের আলাদা অবস্থানে নিজেদের নিয়ে যায় ৷ ২৭ এপ্রিল ২০১১ জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ৩০ জুলাইকে বিশ্ব বন্ধুত্ব দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়৷ তবে ভারত, বাংলাদেশ সহ কিছু দেশে আগস্টের প্রথম রবিবার বন্ধুত্ব দিবস উদযাপন করে ৷

বন্ধু সম্পর্কে কিছু তথ্য:
১. এক গবেষণায় দেখা গেছে, এক জীবনে একজন মানুষের সঙ্গে গড়ে ৩৯৬ জনের বন্ধুত্ব হয়ে থাকে। এর মধ্যে প্রতি ১২ জনে একজন টিকে থাকে।
২. গবেষকদের মতে, বন্ধুরা কাছাকাছি থাকলে মানুষের রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে এবং তা রোগ নিরাময়ে ভূমিকা রাখে।
৩. শিশুরা হাঁটা ও কথা বলা শেখার আগেই বন্ধুত্বের অনুভূতি টের পেতে পারে। একটি গবেষণায় বন্ধুদের মাঝে নাকি ‘জিনগত মিল’ পাওয়া গেছে!

জানা যায়, সেই গবেষণায় গবেষকরা ১ হাজার ৯৩২ জন মানুষের ওপর জরিপ চালান। আত্মীয়দের বাইরে তাদের বন্ধুবান্ধব ও অপরিচিত ব্যক্তিদের সঙ্গে জিনগত বৈশিষ্ট্যের তুলনামূলক বিশ্লেষণও করা হয়। একই সামাজিক পরিমণ্ডলের মানুষের জিনে প্রায় এক শতাংশ মিল পাওয়া যায়। আর অনাত্মীয় বন্ধুদের মধ্যে জিনগত মিল অনেকটা দূরসম্পর্কের আত্মীয়ের সঙ্গে বিদ্যমান মিলের মতো। প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস সাময়িকীতে এ গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল।

‘বন্ধুত্ব’ ব্যাপারটা সব সম্পর্কের ক্ষেত্রেই প্রয়োজন। মনের সঙ্গে মনের মিল হলেই শুধু সত্যিকারের বন্ধুত্ব হয়। বন্ধুত্বে অহংকার ও হিংসার স্থান নেই। ‘বন্ধুত্ব’ এমন একটা বিষয়, যা অনেক ক্ষেত্রে জীবনের চেয়েও দামি হয়ে দাঁড়ায়। এমন নজির পৃথিবীতে বহু আছে।
তবে আজকাল এমন বন্ধুর সংখ্যা খুব বেশি নেই। এ সময়ে সত্যিকারের বন্ধু পাওয়া বা থাকা দুটোই ভাগ্যের ব্যাপার। কোনো কিছু পাওয়া যেমন কঠিন, তেমনি কাছে রাখার গুণটাও জরুরি। মনে রাখতে হবে, সম্পর্কের ক্ষেত্রে পরিচর্যার কোনো বিকল্প নেই। একপাক্ষিক কোনোকিছুই মজবুত হয় না। অবহেলা যে কোনো সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট।

তাই পবিত্র এই সম্পর্ক ‘বন্ধুত্ব’ টিকে থাকুক আমাদের সবার মাঝে। বন্ধুত্বের ভালোবাসা বেঁচে থাকুক প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে।

আর্কাইভ

ক্যালেন্ডার

October 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031