হ্যালোডেস্ক
‘বিয়ে বাড়ি: বাজছে সানাই, বাজছে নানান বাদ্য
একটি ধারে তৈরী হচ্ছে নানা রকম খাদ্য;
হৈ‐চৈ আর চেঁচামেচি, আসছে লুচির গন্ধ,
আলোয় আলোয় খুলি সবাই, কান্নাকাটি বন্ধ,
বাসরঘরে সাজছে ক’নে, সবাই উৎফুল্ল”
সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতাটি পড়েই বোঝা যাচ্ছে বিয়ে মানেই আনন্দ, হই-হুল্লোর আর নানান রকম ব্যস্ততা। আর এই ব্যস্ততা শুধু বর-কনের আশেপাশের লোকজনের ই নয়, বরং বর-কনের ও এই ব্যস্ততা থেকে রেহাই নেই। বিশেষ করে বিয়ের আগে কেনাকাটা, সাজগোজ আর পরে বিভিন্ন আত্মীয় বাড়ি দাওয়াত খেতে যাওয়া, হানিমুন সব মিলিয়ে সদ্য বিয়ে হওয়া মেয়েটির ঝামেলার শেষ নেই।
এতসব ব্যস্ততায় হয়ত পার্লারে যাওয়ার সময়টুকুই করতে পারছেন না অনেকেই। নানারকম মেকাপ, ক্লান্তি আপনার ত্বককে করে দিচ্ছে নির্জীব এবং অনুজ্জ্বল। কিন্তু নতুন বউকে তো সবসময়ই সুন্দর ও প্রাণবন্ত থাকা চাই।
তাই আজ হাতের কাছের খুব সাধারণ ‘কোকোনাট মিল্ক’ অথবা “নারিকেল দুধ”দিয়ে কীভাবে সহজেই ত্বক সুন্দর রাখা যায় তার সবিস্তারে বর্ণনা নিয়েই লেখা…
ক্লিঞ্জিং মিল্ক হিসেবে
মেকাপ, দাগ বা ময়লা দূর করতে ক্লিঞ্জিং মিল্ক হিসেবে নারিকেলের দুধের জুড়ি নেই। বাজারের ক্যামিকেলযুক্ত ক্লিঞ্জিং মিল্ক এর চাইতে নারিকেল দুধ অনেক বেশি ভাল কাজ করবে।
নারিকেলের দুধ- ৩ থেকে ৪ ফোঁটা
দই- ১ টেবিল চামচ
নারিকেলের দুধ আর দই মিলিয়ে মুখে, গলায় ও ঘাড়ে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। ৫মিনিট শুকাতে দিন, তারপর তুলোর নরম বল দিয়ে মুছে নিন। ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
স্ক্রাব হিসেবে
নারিকেলের দুধ- হাফ কাপ
চিনি- হাফ কাপ
নারিকেল তেল- এক টেবিল চামচ
এই স্ক্রাবটি মুখের ত্বককে কোমল ও পরিষ্কার করে। শুধু মুখই নয়, হাত-পাসহ দেহের যেকোনো জায়গায় এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। খুব দ্রুত ত্বকে উজ্জ্বলতা আনতে এই মিশ্রণের জুড়ি নেই। তিনটি উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে লাগিয়ে আলতোভাবে ম্যাসাজ করুন, উষ্ণ পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। নিজেই ফলাফল দেখতে পাবেন।
গায়ের রঙ উজ্জ্বল করতে
চন্দন গুঁড়ো- ১ টেবিল চামচ
নারিকেলের দুধ- ১ টেবিল চামচ
জাফরান- ২-৩ টি
মধু- হাফ টেবিল চামচ
প্রথমে একটি বাটিতে চন্দনের গুঁড়ো এবং নারিকেলের দুধ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। ২-৩টি জাফরান খন্ড এবং মধুও এতে মিশিয়ে নিন। এবার আপনার মুখে এবং ঘাড়ে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে এলে ধুয়ে ফেলুন। এটি ন্যাচারালি আপনার ত্বক ফর্সা করবে।
বডিওয়াশ হিসেবে
চর্বিযুক্ত নারিকেলের দুধ- ১/৪ কাপ
তরল ক্যাস্টাইল সাবান- ১/৩ কাপ
এসেনশিয়াল অয়েল- ৪-৫ ফোঁটা
নারিকেলের দুধের সাথে সাবান মিলিয়ে নিন। যদি সাবানের ঘ্রাণ আপনার পছন্দ না হয়, তাহলে এতে ঘ্রাণযুক্ত এসেনশিয়াল তেল মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে আপনার চাহিদামত ঘ্রাণ পেয়ে যাবেন।মিশ্রণটি একটি পাম্প বোতলে ঢেলে আপনার বাথরুমে রেখে দিতে পারেন যাতে প্রয়োজন মতো ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিবার ব্যবহারের আগে ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিবেন।
মেইকআপ রিমুভার হিসেবে
নারিকেলের দুধ- হাফ টেবিল চামচ
অলিভ অয়েল- ১ টেবিল চামচ
অনেকেই মেকাপ তোলার জন্য অলিভ অয়েল ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু এর সাথে একটু নারিকেল দুধ মিশিয়ে নিলে সবচেয়ে ভাল ফলাফল পাওয়া সম্ভব। সাধারণ মেকাপ এর পাশাপাশি ওয়াটার প্রুফ মেকাপ তুলে আপনার ত্বককে করবে আরও বেশি প্রাণবন্ত।
বলিরেখা দূর করতে
বাদাম- ৬ থেকে ৮ টি
ভিটামিন ই- ২ থেকে ৩ টি ক্যাপসুল
নারিকেল দুধ- ৪ থেকে ৫ ফোঁটা
বাদামগুলো সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে খোসা ছিলে ভালোভাবে পিষে পেস্ট তৈরি করুন। ভিটামিন ই ক্যাপসুল থেকে তেল নিয়ে পেস্টটির সাথে মিশিয়ে নিন। এবার ঘন নারিকেল দুধ এতে মিশান এবং সবগুলো উপাদান একসাথে ব্লেন্ড করে নিন। এবার এয়ার টাইট কন্টেইনার এ রেখে দিন। প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মুখে, চোখের নিচে এবং গলায় ভালোভাবে মেখে নিন। অল্পদিনেই মুখের বলিরেখা দূর হয়ে ত্বক হবে টানটান এবং সজীব।
Add Comment